
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ধনঞ্জয় কুমার দাস, যিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম-সচিব ছিলেন, তার বিরুদ্ধে দুটি গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে:
ধনঞ্জয় কুমার দাসের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৪৭ লাখ ৪২ হাজার ৮২৬ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। অর্থাৎ, তিনি তার আইনী আয়ের বাইরে এই পরিমাণ সম্পদ সংগ্রহ করেছেন।তার নিজ নামে ১৪টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে, যেখানে মোট ৫ কোটি ৯০ লাখ ১৫ হাজার ৫৯০ টাকার লেনদেন সন্দেহজনকভাবে ঘটেছে। এই লেনদেনগুলো যথেষ্ট অস্বাভাবিক বলে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে।
দ্বিতীয় মামলায় শরিফ মাহমুদ অপু, যিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা ছিলেন, তার বিরুদ্ধে ৫৮ লাখ ৯৯ হাজার ৯৯৭ টাকার জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এটি মূলত তার আইনগত আয় থেকে অতিরিক্ত সম্পদ অর্জন করার অভিযোগ, যা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করছে।
তৃতীয় মামলায় পুলিশের ডিআইজি মোল্যা নজরুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে ৯৪ লাখ ১ হাজার ৮০৭ টাকারজ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদঅর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই অভিযোগে তার অর্জিত সম্পদ তার ঘোষিত আয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং এটি দুর্নীতির সম্ভাবনা নির্দেশ করে।
এজাহার অনুযায়ী, আসামিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) (৩) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। এসব ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থপাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এর আগে, ৯ অক্টোবর তারিখে, ক্ষমতার অপব্যবহার, নিয়োগ বাণিজ্য, ঘুষ, অর্থপাচার এবং দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তার স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খান, ছেলে শাফি মোদাচ্ছের খান এবং মেয়ে শাফিয়া তাসনিম খান এর নামে পৃথক চারটি মামলা করে দুদক। একই দিনে কামালের এপিএস মনির হোসেন কে আসামি করে একটি মামলা দায়ের হয়। আসাদুজ্জামান খান কে এসব চারটি মামলায় আসামি করা হয়েছে এবং এসব মামলায় তার বিরুদ্ধে প্রায় শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং অর্থপাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
২১ আগস্ট দুদক, কামালের পরিবারসহ তার সাবেক পিএস হারুন অর রশিদ বিশ্বাস, যুগ্মসচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোল্লা ইব্রাহিম হোসেন, সহকারী একান্ত সচিব মনির হোসেন এবং জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু সহ আটজনের ব্যাংক হিসাবের সমস্ত লেনদেনের তথ্য তলব করে। এছাড়া, ১ সেপ্টেম্বর আদালত তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়।
অন্যদিকে, আওয়ামী সরকারের প্রভাবশালী সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এর সঙ্গে পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোল্যা নজরুল ইসলামের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। ২০১৩ সালে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক কমিশনার হিসেবে মোল্যা নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ঘুষগ্রহণের অভিযোগ উঠেছিল, তবে সে সময় দুদক তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।