২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ তারিখে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর বর্ধিত সভার প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি দলটির রাজনৈতিক অবস্থান, আন্দোলন এবং নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের পাশাপাশি সরকারের প্রতি বিভিন্ন অভিযোগ এবং দাবী তুলে ধরেছে।

সভায় সভাপতিত্ব করেছেন: বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন: বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।

সভায় বিএনপি এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলো এক দফা আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বৈরাচারী শাসন পতনের জন্য কাজ করার শপথ নেয়। এই আন্দোলন ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হবে, যার লক্ষ্য হলো ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা উচ্ছেদ করা। দলের সদস্যরা মহান আল্লাহ’র কাছে শুকরিয়া আদায় করে, কারণ তারা বিশ্বাস করে যে, এই আন্দোলনের শেষ পর্যায়ে গণঅভ্যুত্থান হবে, যা সফল হবে এবং ফ্যাসিবাদী শাসন পতিত হবে।

সভা ২০২৪ সালের ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানায়। এতে উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৯০-এর ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান এবং ১৬ বছরের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের শহীদদের স্মরণ করা হয়।

শহীদদের তালিকা প্রস্তুত করার, তাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদানের এবং তাদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি করা হয়।

আহত, পঙ্গু এবং দৃষ্টিহীনদের প্রতি সমবেদনা জানানো হয় এবং তাদের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণের দাবি তোলা হয়।

সভা বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া’র অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। বিশেষত, সরকার তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা দিয়ে কারারুদ্ধ করলেও, তিনি আপোষহীনভাবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

এক সময়, যখন তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন, তখন সরকার তাকে বিদেশে সুচিকিৎসা গ্রহণ করতে বাধা দিয়েছিল। তবে, দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা এবং নারী শিক্ষা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ নানা ক্ষেত্রে তার অবদানের কথা পুনঃউল্লেখ করা হয়।

বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতার জন্য মহান আল্লাহ’র কাছে প্রার্থনা করছে এবং যারা তার চিকিৎসায় সহায়তা করেছেন, তাদের ধন্যবাদ জানানো হয়।

সভায় বিএনপি’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান’এর সাহসিকতা এবং নেতৃত্বের প্রতি প্রশংসা জানানো হয়। তিনি যখন দেশে থাকতে পারেননি এবং সরকারী নিপীড়নে প্রবাসে ছিলেন, তখন তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন।

জনাব তারেক রহমান বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে, দলের কার্যক্রম এবং আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য অস্বাভাবিক পরিশ্রম করেছেন। তার নেতৃত্বে দল সুসংহত হয়েছে এবং আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করা হয়েছে।

অবৈধ সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য বেগম খালেদা জিয়া’কে কারারুদ্ধ করেছে এবং তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে।

সরকার দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ, বিএনপি এবং সহযোগী দলগুলোর নেতা-কর্মীদের আন্দোলনের প্রতি অত্যন্ত কঠোর ও অবিচারপূর্ণ মনোভাব নিয়েছে। এর ফলে নেতৃবৃন্দ শারীরিকভাবে আক্রান্ত হয়েছেন, অনেকেই গুম এবং বন্দী হয়েছেন, এবং সরকারের অধীনে সাধারণ রাজনৈতিক কার্যক্রম এবং মতপ্রকাশে বাধা সৃষ্টি হয়েছে।

বিএনপি’র জন্য একটি গুরত্বপূর্ণ রাজনৈতিক মাইলফলক হিসেবে কাজ করছে, যেখানে দলটির নেতারা একে অপরকে সহযোগিতা এবং ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে অংশগ্রহণের জন্য উৎসাহিত করছেন। এছাড়া, সরকারকে তাদের নীতির প্রতি জবাবদিহি করার এবং রাজনৈতিক বন্দী, আহত বা গুম হওয়া ব্যক্তিদের যথাযথ সহায়তা প্রদানের দাবী তোলা হচ্ছে।

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *