০৯:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শান্তিপূর্ণ মিছিল ও সমাবেশে অংশগ্রহণের অধিকার নিশ্চিত করতে হাইকোর্টের সাত দফা নির্দেশনা ।

বাংলাদেশের হাইকোর্ট শান্তিপূর্ণ মিছিল, সমাবেশ ও জনসভায় অংশগ্রহণের অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের প্রাথমিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার জন্য সাত দফা নির্দেশনা দিয়েছে। গত বছরের জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হেফাজতে থাকা ছয় ছাত্র নেতার মুক্তির দাবিতে এবং মিছিল, সমাবেশ ও জনসভায় তাজা গুলির ব্যবহার বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে একটি রিট দায়ের করা হয়।

হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের বেঞ্চ গত বছরের ৪ আগস্ট এ রায় দেন। সম্প্রতি সেই রায়ের অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে এবং শনিবার (১৫ মার্চ) ঢাকা পোস্টে পাওয়া যায়।

রায়ে উল্লেখিত সাত দফা নির্দেশনা:

১. প্রত্যেক নাগরিকের শান্তিপূর্ণ মিছিল, সমাবেশ ও জনসভায় অংশগ্রহণের অধিকার থাকবে
২. মানুষের জীবন সর্বোচ্চ মূল্যবান, তাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মানুষের জীবন ও মর্যাদা রক্ষা করবে।
৩. কঠোরভাবে প্রয়োজন হলে কেবলমাত্র সীমিত পরিমাণে বল প্রয়োগ করা যাবে
৪. আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে মানুষের মর্যাদা রক্ষা করে কাজ করতে হবে
৫. শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা সকল নাগরিক সমানভাবে উপভোগ করবে এবং বৈষম্য করা যাবে না।
৬. আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো তাদের আইনি বাধ্যবাধকতা মেনে চলবে এবং এর ব্যর্থতার জন্য দায়বদ্ধ থাকবে।
৭. বেআইনি সমাবেশে পুলিশ কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে তা সংবিধান ও আইনের বিধান অনুযায়ী হবে

রায়ে আরও বলা হয়, রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ব্যবহারের পর যদি পরিস্থিতি গুরুতর না হয়, তবে তাজা গুলি ব্যবহার করা যাবে না

হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করা হয়, ছয় ছাত্র সমন্বয়ককে অবৈধভাবে হেফাজতে রাখা হয়েছিল এবং তাদের মুক্তি দেওয়ার পর রিটের দ্বিতীয় অংশ অকার্যকর হয়ে পড়ে। তবে, এই রায়ের মাধ্যমে আদালত নিশ্চিত করেছে যে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো অবস্থাতেই অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করতে পারবে না, বিশেষত যখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে।

রিটের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সারা হোসেন, তবারক হোসেন, জেড আই খান পান্না, ব্যারিস্টার অনীক আর হক, মো. ওমর ফারুক, আইনুন্নাহার সিদ্দিকা এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

এই রায়টি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ট্যাগ
পোস্টকারীর সকল তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শান্তিপূর্ণ মিছিল ও সমাবেশে অংশগ্রহণের অধিকার নিশ্চিত করতে হাইকোর্টের সাত দফা নির্দেশনা ।

প্রকাশিত হয়েছে: ০২:২২:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫

বাংলাদেশের হাইকোর্ট শান্তিপূর্ণ মিছিল, সমাবেশ ও জনসভায় অংশগ্রহণের অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের প্রাথমিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার জন্য সাত দফা নির্দেশনা দিয়েছে। গত বছরের জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হেফাজতে থাকা ছয় ছাত্র নেতার মুক্তির দাবিতে এবং মিছিল, সমাবেশ ও জনসভায় তাজা গুলির ব্যবহার বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে একটি রিট দায়ের করা হয়।

হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসাইন দোলনের বেঞ্চ গত বছরের ৪ আগস্ট এ রায় দেন। সম্প্রতি সেই রায়ের অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে এবং শনিবার (১৫ মার্চ) ঢাকা পোস্টে পাওয়া যায়।

রায়ে উল্লেখিত সাত দফা নির্দেশনা:

১. প্রত্যেক নাগরিকের শান্তিপূর্ণ মিছিল, সমাবেশ ও জনসভায় অংশগ্রহণের অধিকার থাকবে
২. মানুষের জীবন সর্বোচ্চ মূল্যবান, তাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মানুষের জীবন ও মর্যাদা রক্ষা করবে।
৩. কঠোরভাবে প্রয়োজন হলে কেবলমাত্র সীমিত পরিমাণে বল প্রয়োগ করা যাবে
৪. আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে মানুষের মর্যাদা রক্ষা করে কাজ করতে হবে
৫. শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা সকল নাগরিক সমানভাবে উপভোগ করবে এবং বৈষম্য করা যাবে না।
৬. আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো তাদের আইনি বাধ্যবাধকতা মেনে চলবে এবং এর ব্যর্থতার জন্য দায়বদ্ধ থাকবে।
৭. বেআইনি সমাবেশে পুলিশ কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে তা সংবিধান ও আইনের বিধান অনুযায়ী হবে

রায়ে আরও বলা হয়, রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ব্যবহারের পর যদি পরিস্থিতি গুরুতর না হয়, তবে তাজা গুলি ব্যবহার করা যাবে না

হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করা হয়, ছয় ছাত্র সমন্বয়ককে অবৈধভাবে হেফাজতে রাখা হয়েছিল এবং তাদের মুক্তি দেওয়ার পর রিটের দ্বিতীয় অংশ অকার্যকর হয়ে পড়ে। তবে, এই রায়ের মাধ্যমে আদালত নিশ্চিত করেছে যে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো অবস্থাতেই অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করতে পারবে না, বিশেষত যখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে।

রিটের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সারা হোসেন, তবারক হোসেন, জেড আই খান পান্না, ব্যারিস্টার অনীক আর হক, মো. ওমর ফারুক, আইনুন্নাহার সিদ্দিকা এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

এই রায়টি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।