০৩:৪০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫, ২৭ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পটুয়াখালীর বাউফলে ‘জুলাই বিপ্লব’ এর যোদ্ধা আশিকুর রহমান হৃদয়ের মৃত্যু ।

পটুয়াখালীর বাউফলে ‘জুলাই বিপ্লব’ আন্দোলনের তরুণ যোদ্ধা আশিকুর রহমান হৃদয় (১৭) পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। গত ১৮ জুলাই ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে ‘জুলাই বিপ্লব’ চলাকালীন সময়ে পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন তিনি। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন হৃদয়।

হৃদয় পশ্চিম যৌতা গ্রামে রিকশাচালক আনসার হাওলাদারের ছেলে ছিলেন। জীবিকার তাগিদে তিনি ঢাকায় শ্রমিকের কাজ করতেন, তবে পরে তিনি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হয়ে ওঠেন। ১৮ জুলাই, ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে তার মাথায় তিনটি গুলি লাগে। তৎকালীন সরকারের কঠোর দমননীতির কারণে তিনি দীর্ঘদিন গোপনে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হন।

সরকার পরিবর্তনের পর ৫ আগস্ট তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যেখানে চিকিৎসকরা দুটি গুলি অপসারণ করতে সক্ষম হলেও, একটি গুলি জটিল স্থানে আটকে ছিল এবং তা অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। গত ২ এপ্রিল হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে, ৪ এপ্রিল তাকে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়, তবে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে তা সম্ভব হয়নি।

বিকেল ৩টার দিকে হৃদয়ের মৃত্যু ঘটে। তার বাবা আনসার হাওলাদার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার রিকশা আর একটা গরু বিক্রি করে যতটা পেরেছি করেছি। কিন্তু ছেলেকে বিদেশে বা উন্নত চিকিৎসা করাতে পারিনি। চিকিৎসার অভাবেই ও চলে গেল।”

বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আ. রউফ জানান, “হৃদয়কে দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তার অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক। আমরা তাকে বরিশাল রেফার করেছি, কিন্তু সময়মত তাকে সেখানে নেওয়া সম্ভব হয়নি। বিকেল ৩টায় তিনি মারা যান।”

ট্যাগ
পোস্টকারীর সকল তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

“আবুধাবিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের অনুসন্ধান দলকে আনুষ্ঠানিক স্বাগত”

পটুয়াখালীর বাউফলে ‘জুলাই বিপ্লব’ এর যোদ্ধা আশিকুর রহমান হৃদয়ের মৃত্যু ।

প্রকাশিত হয়েছে: ০১:০৭:১২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৫ এপ্রিল ২০২৫

পটুয়াখালীর বাউফলে ‘জুলাই বিপ্লব’ আন্দোলনের তরুণ যোদ্ধা আশিকুর রহমান হৃদয় (১৭) পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। গত ১৮ জুলাই ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে ‘জুলাই বিপ্লব’ চলাকালীন সময়ে পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন তিনি। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন হৃদয়।

হৃদয় পশ্চিম যৌতা গ্রামে রিকশাচালক আনসার হাওলাদারের ছেলে ছিলেন। জীবিকার তাগিদে তিনি ঢাকায় শ্রমিকের কাজ করতেন, তবে পরে তিনি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হয়ে ওঠেন। ১৮ জুলাই, ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে তার মাথায় তিনটি গুলি লাগে। তৎকালীন সরকারের কঠোর দমননীতির কারণে তিনি দীর্ঘদিন গোপনে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হন।

সরকার পরিবর্তনের পর ৫ আগস্ট তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যেখানে চিকিৎসকরা দুটি গুলি অপসারণ করতে সক্ষম হলেও, একটি গুলি জটিল স্থানে আটকে ছিল এবং তা অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। গত ২ এপ্রিল হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে, ৪ এপ্রিল তাকে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়, তবে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে তা সম্ভব হয়নি।

বিকেল ৩টার দিকে হৃদয়ের মৃত্যু ঘটে। তার বাবা আনসার হাওলাদার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার রিকশা আর একটা গরু বিক্রি করে যতটা পেরেছি করেছি। কিন্তু ছেলেকে বিদেশে বা উন্নত চিকিৎসা করাতে পারিনি। চিকিৎসার অভাবেই ও চলে গেল।”

বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আ. রউফ জানান, “হৃদয়কে দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তার অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক। আমরা তাকে বরিশাল রেফার করেছি, কিন্তু সময়মত তাকে সেখানে নেওয়া সম্ভব হয়নি। বিকেল ৩টায় তিনি মারা যান।”