
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর ব্যাপক আগ্রাসনের প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে আজ দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন শহরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ এই প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন।
গুলশানে মার্কিন দূতাবাসের সামনে প্রতিবাদ
আজ সোমবার সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে গুলশান ১ এলাকায় মার্কিন দূতাবাসের সামনে একদল তরুণ মিছিল বের করেন। মিছিলটি দ্রুতই রাস্তার ওপর অবস্থান নেয়, ফলে যান চলাচল একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। মিছিলের সাথে সঙ্গে পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তারা কাজ করছেন। পুলিশ ও সেনাসদস্যরা মিছিলের চারপাশে শক্ত অবস্থান নিয়ে ছিলেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন গুলশান বিভাগের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা, যারা বিক্ষোভকারীদের শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিরোধ করতে কাজ করছেন।
মিছিলের অংশগ্রহণকারীরা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহফুজ আলম বলেন, “ফিলিস্তিন গাজার জয় হবেই হবে। যত দিন এই পৃথিবী থাকবে, তত দিন ওই ইসলামের ভূমি ধ্বংস করা যাবে না। এখন দরকার পুরো পৃথিবীর মুসলিমদের এক হওয়া। জিহাদ ঘোষণা করা। সেটারই প্রথম ধাপ পুরো বিশ্বে এই বিক্ষোভ।”
এর আগে সকাল থেকেই বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘ফ্রি ফ্রি ফিলিস্তিন’ এবং ‘আমরা কারা, তোমরা কারা, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন’ স্লোগান দিয়ে অবস্থান নিয়েছেন। তারা দাবি জানিয়েছেন, বিশ্বের মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে ফিলিস্তিনের অধিকার রক্ষা করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে অবিলম্বে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে। শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেয়, “ট্রাম্পের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে।”
এই প্রতিবাদে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, তারা ইসরায়েলের প্রতিহিংসামূলক হামলা এবং মার্কিন প্রশাসনের নীরব সমর্থনের বিরুদ্ধে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
পুলিশ ও সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে প্রতিবাদ
বিক্ষোভকারীদের অধিকাংশই তরুণ এবং শিক্ষার্থী হওয়ায়, তাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ ছিল। তবে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিশ্চিত করতে সকাল থেকেই গুলশান ও বাড্ডা এলাকায় পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন ছিলেন। গুলশান এলাকা দিয়ে যান চলাচল কিছুটা সীমিত হয়ে পড়লেও, বিক্ষোভকারীরা তাদের উদ্দেশ্যে স্থির থাকতে পেরেছেন। দুপুর ১২টার দিকে নতুন বাজার সড়কের এক পাশ খুলে দেওয়া হয়, ফলে যান চলাচল পুনরায় স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
শিক্ষার্থীরা শুধু ঢাকা শহরে নয়, বরং চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশালসহ অন্যান্য শহরেও বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছেন। এসব কর্মসূচিতে প্রধানত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নিচ্ছেন। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফিলিস্তিনের প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন এবং এ বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করছেন।
বিশ্ব মুসলিমদের একতা দাবি
প্রতিবাদকারীরা বলেন, বিশ্বের মুসলিমরা যদি এক হয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নেন, তবে আন্তর্জাতিকভাবে তাদের অবস্থা উন্নতি হতে পারে। তারা দাবি করেছেন, ফিলিস্তিনিরা তাদের অধিকারের জন্য লড়াই করছেন এবং তাদের পাশে দাঁড়ানোর মাধ্যমে মুসলিম বিশ্বের ঐক্যকে আরও দৃঢ় করা সম্ভব।