ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের পয়লা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য নির্মিত প্রধান মোটিফ ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’তে দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে। কারা এ আগুন দিয়েছে তা এখনও জানা যায়নি।
চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম চঞ্চল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,
“ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতিকে টার্গেট করে আগুন লাগানো হয়েছে। আকৃতিটি পুরোপুরি পুড়ে গেছে। একইসাথে একটি পায়রার অবয়বও পুড়ে গেছে। আনুমানিক রাত ৪টা থেকে সাড়ে ৪টার মধ্যে আগুন দেয়া হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, আগুন লাগার খবর ফজরের নামাজের পর তারা জানতে পারেন। তবে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পৌঁছাতে পুরো কাঠামোটি পুড়ে যায়।
“আগুনটা পরিকল্পিতভাবে লাগানো হয়েছে বলে আমরা নিশ্চিত। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। ফুটেজ দেখে অপরাধীদের শনাক্ত করা হবে,” বলেন অধ্যাপক চঞ্চল।
ঘটনার পর চারুকলায় চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের অনেকে একে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে উল্লেখ করেছেন। চারুকলার এক শিক্ষার্থী বলেন,
“এটি নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয়েছিল। আজকের মধ্যেই কাজ পুরোপুরি শেষ হতো। কেউ ইচ্ছা করেই এই কাজ করেছে, এটা নিঃসন্দেহে। প্রশাসনের কেউ এর সঙ্গে জড়িত কি না সেটিও খতিয়ে দেখা দরকার।”
উল্লেখ্য, বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপনের অংশ হিসেবে চারুকলা অনুষদে বিশাল আকৃতির একটি মোটিফ নির্মাণ করা হচ্ছিল— নাম ‘ফ্যাসিস্টের প্রতিকৃতি’। বাঁশ-বেতের কারুকাজে তৈরি দৈত্যাকৃতির এই মুখাবয়বটি ছিল প্রায় ২০ ফুট উচ্চতার। শিল্পকর্মটির কেন্দ্রবিন্দুতে একটি বিকৃত মুখ, যার পাশে ছিল শিং-এর মতো অবয়ব। জানা গেছে, এটি ছিল এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রধান মোটিফ।
ঘটনার পর কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, জানতে চাইলে ডিন বলেন,
“আমরা জরুরি মিটিংয়ে বসেছি। পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে আলোচনা চলছে।”
পয়লা বৈশাখের মতো বর্ণাঢ্য উৎসবের প্রাক্কালে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছেন সংস্কৃতি অঙ্গনের মানুষজনসহ সাধারণ নাগরিকরাও।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ Abdus Salam
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।