
চার মাস ১২ দিন পর আবারও খুলেছে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ১১টি দানসিন্দুক। শনিবার (১২ এপ্রিল) সকালে সিন্দুকগুলো খুলে পাওয়া গেছে ২৮ বস্তা টাকা, বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার এবং বৈদেশিক মুদ্রা। সকাল ৭টায় দানসিন্দুক খোলার পর থেকে এখনও চলছে গণনার কাজ।
জেলা শহরের নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত এই মসজিদটির দানসিন্দুক প্রতি তিন থেকে চার মাস পরপর খোলা হয়। এবারকার গণনায় অংশ নিচ্ছেন মাদরাসার শিক্ষার্থী, ব্যাংক কর্মকর্তা, মসজিদ কমিটির সদস্য ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ প্রায় ৪০০ জন।
সকালে উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী, ও অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তা। গণনার শুরু হয় সকাল ৯টায়। প্রথমে লোহার দানসিন্দুকগুলো থেকে টাকা বের করে বস্তায় ভরে, মসজিদের দ্বিতীয় তলার মেঝেতে ঢালা হয়।
এর আগে ২০২৩ সালের ৩০ নভেম্বর, দানসিন্দুক খুলে পাওয়া গিয়েছিল রেকর্ড ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা, সঙ্গে ছিল স্বর্ণ, হীরা ও বৈদেশিক মুদ্রা। সেই দানের অর্থসহ এখন পর্যন্ত ব্যাংকে জমা হয়েছে মোট ৮০ কোটি ৭৫ লাখ ৭৩ হাজার ৫৭৬ টাকা। আজকের দানও সেই টাকার সঙ্গে যুক্ত হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বলেন, “পাগলা মসজিদের ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণে এ অর্থের একটি বড় অংশ ব্যয় হচ্ছে। বাকিটা ব্যাংকে সংরক্ষণ করা হয় এবং জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানা ও সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যবহার করা হয়।”
মসজিদ কমিটি জানিয়েছে, ছয়তলাবিশিষ্ট এক অত্যাধুনিক ‘পাগলা মসজিদ ও ইসলামিক কমপ্লেক্স’ নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর প্রাথমিক খরচ ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। এই কমপ্লেক্সে একসঙ্গে ৩০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী জানান, “সকাল থেকে দানসিন্দুক খোলা, টাকা বস্তায় ভরা, গণনা এবং ব্যাংকে পৌঁছে দেওয়া—সবক্ষেত্রে সার্বিক নিরাপত্তায় ছিল পুলিশ সদস্যরা।”