প্রিন্ট এর তারিখঃ এপ্রিল ২০, ২০২৫, ১২:০৭ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ এপ্রিল ১৬, ২০২৫, ১০:৫০ পি.এম
দলিল রেজিস্ট্রেশনে ঘুষ-অনিয়মে জর্জরিত সেবা ।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
দলিল রেজিস্ট্রেশন, তল্লাশি ও নকল উত্তোলনসহ বিভিন্ন সেবা নিতে গিয়ে হয়রানি ও ঘুষের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ—এমন অভিযোগের ভিত্তিতে দেশের ৩৫টি সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে একযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযানে নানা অনিয়ম, দালাল চক্রের তৎপরতা ও ঘুষ লেনদেনের চিত্র উঠে এসেছে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুদকের বিভিন্ন এনফোর্সমেন্ট টিম দেশের বিভিন্ন স্থানে এই অভিযান পরিচালনা করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম।
🔎 কোথায় কী পাওয়া গেল?
- দিনাজপুর চিরিরবন্দর: এক নকলনবিশের কাছ থেকে ২৪ হাজার টাকা ও এক অফিস সহকারীর কাছ থেকে ১১,৫০০ টাকা জব্দ। সদুত্তর না দিতে পারায় একজনকে বরখাস্ত ও অন্যজনের বিরুদ্ধে তদন্তের সুপারিশ।
- খোকসা, কুষ্টিয়া: নাইট গার্ডের কাছে পাওয়া গেল ৪০ হাজার টাকা—যার সন্তোষজনক ব্যাখ্যা নেই। পাওয়া গেছে অফিসে অনিয়মের প্রমাণ।
- গোপালগঞ্জ কোটালীপাড়া: দলিলপ্রতি মোহরাদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছিল ১,৯০০ থেকে ২,০০০ টাকা পর্যন্ত। পাওয়া গেছে রশিদ বহিতে গরমিল।
- সিলেট গোয়াইনঘাট: দলিল রেজিস্ট্রেশন থেকে শুরু করে প্রতিটি ধাপে ঘুষ আদায়ের অভিযোগ। এক ভুক্তভোগী জানান, একটি দলিল করতে দিতে হয়েছে ৪০ হাজার টাকা ঘুষ।
- যশোর সদর: এক অফিস সহকারীর টেবিল থেকে ৫,১০০ টাকা উদ্ধার, আরেকজন নকলনবিশ আগেই আত্মসাতের অভিযোগে বরখাস্ত হয়েছিলেন।
- খুলনা সদর: ছদ্মবেশে অভিযান চালিয়ে ঘুষ, অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও দালালদের সক্রিয়তার প্রমাণ মেলে।
- ময়মনসিংহ গৌরীপুর: একজন উমেদারকে অতিরিক্ত অর্থ দাবি করার সময় হাতেনাতে ধরা হয়।
- চট্টগ্রাম জেলা: সাবেক এক অফিস সহকারী কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করে দায়িত্ব পালন করছেন; ১৯ জন নকলনবিশের নিয়োগে অনিয়ম ধরা পড়ে।
- শরীয়তপুর সদর: শ্রেণি পরিবর্তনের মাধ্যমে দলিল রেজিস্ট্রেশন করে প্রায় ৩৮ লাখ ৮৩ হাজার টাকা রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে বলে জানা যায়।
টাঙ্গাইল, ঠাকুরগাঁও, বরিশাল, বাগেরহাট, বগুড়া, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ঢাকা (আশুলিয়া ও মিরপুর), ফরিদপুর, গাজীপুর, হবিগঞ্জ, ঝিনাইদহ, কিশোরগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, নোয়াখালী, নওগাঁ, পাবনা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, রাজশাহী, রংপুর, জামালপুর—সব জেলায়ই সরকারের নির্ধারিত ফি’র অতিরিক্ত অর্থ আদায়, সেবাপ্রার্থীদের হয়রানি এবং রেকর্ডপত্রে অনিয়ম পাওয়া গেছে।
দুদক জানিয়েছে, যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। জেলা রেজিস্ট্রারদের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে পাঠানো হয়েছে চিঠি।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ Abdus Salam
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।