বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে নানা চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলেছে, এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারকে কর ব্যবস্থার সংস্কার, বিনিময় হারে নমনীয়তা এবং আর্থিক খাতে কাঠামোগত পরিবর্তন আনতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ১২ দিনের সফর শেষে ঢাকায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় আইএমএফ প্রতিনিধি দল। সফরের নেতৃত্ব দেন সংস্থাটির কর্মকর্তা ক্রিস পাপাজর্জিও।
তিনি বলেন, "বাংলাদেশ সরকার যেসব আর্থিক সংস্কারের পদক্ষেপ নিয়েছে, তা সঠিক পথে রয়েছে। তবে মূল্যস্ফীতি এবং বৈদেশিক চাপে স্থিতিশীলতা রক্ষায় এখনই নীতিগত কড়াকড়ি প্রয়োজন।”
আইএমএফ জানায়, ২০২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে হয়েছে ৩.৩ শতাংশ, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৫.১ শতাংশ। এছাড়া চলতি বছরের মার্চে মূল্যস্ফীতি ৯.৪ শতাংশ থাকলেও তা এখনও বাংলাদেশ ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রার (৫-৬ শতাংশ) চেয়ে অনেক বেশি।
ক্রিস পাপাজর্জিও আরও বলেন, “বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত অত্যন্ত কম। রাজস্ব বাড়াতে সহজ, স্বচ্ছ ও ন্যায্য কর ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। একই সঙ্গে দুর্বল ব্যাংক পুনর্গঠন, ঝুঁকিভিত্তিক তদারকি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা জরুরি।”
তিনি জানান, বিনিময় হার আরও নমনীয় হলে মূল্য প্রতিযোগিতা বজায় থাকবে, রিজার্ভ পুনর্গঠন সহজ হবে এবং বাহ্যিক চাপ মোকাবিলায় অর্থনীতি আরও স্থিতিশীল হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশ ৪৭০ কোটি ডলারের আইএমএফ ঋণ কর্মসূচির আওতায় আছে। এ পর্যন্ত তিন কিস্তিতে ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। এখনও বাকি আছে ২৩৯ কোটি ডলার।
আইএমএফ আশা করছে, আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠেয় আইএমএফ-ওয়ার্ল্ড ব্যাংক বসন্তকালীন বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সমঝোতা হতে পারে। তবে অর্থ ছাড়ের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে আগামী জুনে বোর্ড সভায়।
সরকার আশাবাদী, চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ একসঙ্গে ছাড় হবে জুন মাসেই।
আইএমএফ প্রতিনিধি দলটি সফরকালে অর্থ উপদেষ্টা, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থসচিব, এনবিআর চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করেছে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ Abdus Salam
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।