১০:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কারিগরি শিক্ষায় সংস্কার চেয়ে রেল অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা ।

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছয় দফা দাবির বাস্তবায়নে আন্দোলনের অংশ হিসেবে রেলপথ অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন দেশের সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর শিক্ষার্থীরা।
আগামী বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দেশব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারী নেতারা।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর তেজগাঁও সাতরাস্তা মোড়ে আয়োজিত এক সমাবেশে এই ঘোষণা দেন কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম প্রতিনিধি জুবায়ের পাটোয়ারী। এ সময় তিনি আন্দোলন সফল করতে সারা দেশের পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান এবং অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন।

তিনি বলেন,

“কর্তৃপক্ষ আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের যদি একজন সাধারণ প্রিন্সিপালকে বদলি করতে সারাদিন লেগে যায়, তাহলে তারা কীভাবে আমাদের ছয় দফা বাস্তবায়ন করবে? দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা দেশজুড়ে রেলপথ অবরোধ করে আন্দোলন চালিয়ে যাব।”

আন্দোলনের চাপের মুখে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের বর্তমান অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান খানকে সরিয়ে দিয়ে নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে সাহেলা পারভীন-কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, এটি তাদের দাবির একটি অংশমাত্র, পূর্ণ ছয় দফা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন থেকে সরে আসবেন না।

১. ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় বাতিল, পদবি পরিবর্তন এবং মামলা সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুত করা। ২০২১ সালে বিতর্কিতভাবে নিয়োগ পাওয়া ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের নিয়োগ বাতিল এবং সংশ্লিষ্ট নিয়োগবিধি সংশোধন।

ভর্তির বয়স সীমা নির্ধারণ, উন্নত কারিকুলাম প্রণয়ন এবং একাডেমিক কার্যক্রম ধাপে ধাপে ইংরেজি মাধ্যমে পরিচালনার উদ্যোগ।

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য সংরক্ষিত ১০ম গ্রেডের পদে নিয়োগ নিশ্চিত এবং তাদের নিচু গ্রেডে নিয়োগ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা।

কারিগরি শিক্ষা বহির্ভূত জনবল নিয়োগ বন্ধ এবং কারিগরি পদের জন্য যোগ্য জনবল নিশ্চিত করে শূন্য পদে শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগ।

কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠন এবং কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন প্রতিষ্ঠা।

টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নওগাঁ, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক পাস শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিতকরণ।

শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে এখনো সরকারিভাবে কোনও পূর্ণাঙ্গ প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং আন্দোলন যাতে শান্তিপূর্ণ থাকে, সে লক্ষ্যে তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের এ ধরনের বৃহৎ কর্মসূচি শিক্ষা ও পরিবহন ব্যবস্থার ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তাঁরা বলছেন, সরকারকে দ্রুত এবং সংলাপের মাধ্যমে দাবি-দাওয়াগুলো সমাধানে এগিয়ে আসা উচিত।

 

ট্যাগ
পোস্টকারীর সকল তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কারিগরি শিক্ষায় সংস্কার চেয়ে রেল অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা ।

প্রকাশিত হয়েছে: ০৭:৫৫:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছয় দফা দাবির বাস্তবায়নে আন্দোলনের অংশ হিসেবে রেলপথ অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন দেশের সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর শিক্ষার্থীরা।
আগামী বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দেশব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারী নেতারা।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর তেজগাঁও সাতরাস্তা মোড়ে আয়োজিত এক সমাবেশে এই ঘোষণা দেন কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম প্রতিনিধি জুবায়ের পাটোয়ারী। এ সময় তিনি আন্দোলন সফল করতে সারা দেশের পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান এবং অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন।

তিনি বলেন,

“কর্তৃপক্ষ আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের যদি একজন সাধারণ প্রিন্সিপালকে বদলি করতে সারাদিন লেগে যায়, তাহলে তারা কীভাবে আমাদের ছয় দফা বাস্তবায়ন করবে? দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা দেশজুড়ে রেলপথ অবরোধ করে আন্দোলন চালিয়ে যাব।”

আন্দোলনের চাপের মুখে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের বর্তমান অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান খানকে সরিয়ে দিয়ে নতুন অধ্যক্ষ হিসেবে সাহেলা পারভীন-কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, এটি তাদের দাবির একটি অংশমাত্র, পূর্ণ ছয় দফা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন থেকে সরে আসবেন না।

১. ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় বাতিল, পদবি পরিবর্তন এবং মামলা সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুত করা। ২০২১ সালে বিতর্কিতভাবে নিয়োগ পাওয়া ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের নিয়োগ বাতিল এবং সংশ্লিষ্ট নিয়োগবিধি সংশোধন।

ভর্তির বয়স সীমা নির্ধারণ, উন্নত কারিকুলাম প্রণয়ন এবং একাডেমিক কার্যক্রম ধাপে ধাপে ইংরেজি মাধ্যমে পরিচালনার উদ্যোগ।

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য সংরক্ষিত ১০ম গ্রেডের পদে নিয়োগ নিশ্চিত এবং তাদের নিচু গ্রেডে নিয়োগ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা।

কারিগরি শিক্ষা বহির্ভূত জনবল নিয়োগ বন্ধ এবং কারিগরি পদের জন্য যোগ্য জনবল নিশ্চিত করে শূন্য পদে শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগ।

কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠন এবং কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন প্রতিষ্ঠা।

টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নওগাঁ, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক পাস শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিতকরণ।

শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে এখনো সরকারিভাবে কোনও পূর্ণাঙ্গ প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং আন্দোলন যাতে শান্তিপূর্ণ থাকে, সে লক্ষ্যে তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের এ ধরনের বৃহৎ কর্মসূচি শিক্ষা ও পরিবহন ব্যবস্থার ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তাঁরা বলছেন, সরকারকে দ্রুত এবং সংলাপের মাধ্যমে দাবি-দাওয়াগুলো সমাধানে এগিয়ে আসা উচিত।