চার দিনের সফরে আজ সোমবার রাতে কাতারের রাজধানী দোহার উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। কাতার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ২২ ও ২৩ এপ্রিল আয়োজিত আর্থনা সম্মেলন-২০২৫-এ অংশগ্রহণ তাঁর সফরের মূল উপলক্ষ হলেও, এই সফরকে ঘিরে বাংলাদেশ-কাতার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হবে বলে জানাচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ড. ইউনূসের সফরে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির সঙ্গে বৈঠকে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি)-এর নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ, নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ, এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া কিছু রোহিঙ্গাকে কাতারে পুনর্বাসন নিয়ে আলোচনা হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, “এই সফরের তাৎপর্য অনেক। কাতারের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক ও দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি সরবরাহ চুক্তিতে বাংলাদেশ আরও দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পেতে চায়।”
এই সফরে ড. ইউনূসের সঙ্গে থাকবেন দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সফরসঙ্গী হিসেবে চারজন জাতীয় নারী ক্রীড়াবিদ—যাদের অংশগ্রহণ সম্মেলনের 'উত্তরাধিকার, উদ্ভাবন ও ঐতিহ্য' বিষয়ক প্রতিপাদ্যকে বাস্তব প্রতিফলন করবে।
বাংলাদেশ বর্তমানে গ্যাসের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন সংকটে ভুগছে এবং এলএনজি আমদানি নির্ভরতা বাড়ছে। তবে ডলার সংকটের কারণে আমদানি বিল পরিশোধে বিঘ্ন ঘটছে। বাংলাদেশ চায়, বিল পরিশোধে সাময়িক অসুবিধা থাকলেও কাতার যেন সরবরাহ চালিয়ে যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ৭০ কোটি ডলারের ঋণ নিয়ে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এলএনজি আমদানির পরিকল্পনা করছে সরকার।
কাতারে বর্তমানে প্রায় ৪ লাখ বাংলাদেশি কর্মরত রয়েছেন। নতুন করে কর্মী নিয়োগ, বিশেষ করে অল্পদক্ষ শ্রমিকদের অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানাবে বাংলাদেশ।
রোহিঙ্গা ইস্যুতেও বাংলাদেশ কাতারের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে—হোক তা সরাসরি পুনর্বাসনের মাধ্যমে কিংবা আন্তর্জাতিক সহায়তায় ভূমিকা রেখে।
ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি তাঁর ষষ্ঠ আন্তর্জাতিক সফর। এর আগে তিনি জাতিসংঘ অধিবেশন, কপ-২৯, ডি-৮ সম্মেলন, দাভোসের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম এবং চীন সফরে অংশ নিয়েছেন।
সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে ২৪ এপ্রিল দেশে ফেরার কথা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টার।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ Abdus Salam
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।