
একদিন এক ছোট্ট ইঁদুর আবিষ্কার করল, কৃষকের ঘরে একটি ইঁদুর ধরার ফাঁদ পাতা হয়েছে। এটি দেখে সে খুব ভয় পেল, কারণ তার জীবনের জন্য এটি ছিল একটি বড় হুমকি। আতঙ্কিত হয়ে সে সাহায্যের জন্য ছুটে গেল বাড়ির অন্যান্য প্রাণীদের কাছে।
প্রথমে সে মুরগির কাছে গিয়ে বলল,
“বোন, ঘরে ইঁদুর ধরার ফাঁদ পাতা হয়েছে, আমাকে সাহায্য করো!”
মুরগি মাথা নাড়িয়ে জবাব দিল,
“ওটা তো তোমার সমস্যা! আমি তো এতে ধরা পড়ব না। আমি দুঃখিত, কিছু করতে পারব না।”
মুরগির কাছ থেকে নিরাশ হয়ে ইঁদুর গেল ছাগলের কাছে। ছাগলও বলল,
“ইঁদুরের ফাঁদে আমার কিছু যায় আসে না। ওটা তো তোমাদের মত ছোট প্রাণীদের জন্য।”
শেষ চেষ্টা হিসেবে ইঁদুর গেল গরুর কাছে। গরু হেসে বলল,
“এত বড় গরু হয়ে আমি কি ফাঁদে পড়ব নাকি? তুমি নিজেই নিজের ব্যবস্থা করো।”
সবাই থেকে সাহায্য না পেয়ে ইঁদুর একাকী কেঁদে নিজের ঘরে ফিরে গেল।
রাতে হঠাৎ সেই ফাঁদে কিছু একটা ধরা পড়ল। বাড়ির কর্ত্রী অন্ধকারে কিছু না বুঝেই ফাঁদের কাছে গিয়ে হাত দিলেন—এবং সঙ্গে সঙ্গে একটি বিষাক্ত সাপ তাকে কামড়ে দিল! তার চিৎকারে সবাই ছুটে এল। ডাক্তার ডাকা হলো, কিন্তু অবস্থা ভালো ছিল না। পথ্য হিসেবে ডাক্তার বললেন,
“মুরগির স্যুপ খেতে হবে।”
পরদিন মুরগি জবাই করে স্যুপ বানানো হল।
অবস্থা আরও খারাপ হতে লাগলো, আত্মীয়-স্বজনরা দূরদূরান্ত থেকে দেখতে এলেন। আপ্যায়নের জন্য ছাগলকেও জবাই করা হল।
শেষমেশ চিকিৎসার খরচ চালাতে না পেরে, গরুটিকেও কসাইখানায় বিক্রি করে দিতে হল।
দিনশেষে, গৃহিণী সেরে উঠলেন। আর এই পুরো ঘটনাটি ছোট্ট ইঁদুরটি নিজের গর্ত থেকে নিরবে দেখল—যে বিপদ সে সবাইকে জানিয়েছিল, সেই অবহেলাই একে একে সবার ওপর এসে পড়ল।
উপদেশ:
কেউ যখন বিপদে পড়ে, তখন সেই বিপদ আমাদের না ছুঁলেও, সহানুভূতির হাত বাড়ানো উচিত। অন্যের কষ্টকে অবহেলা করলে একদিন সেই কষ্ট ঘুরে আমাদের দিকেও আসতে পারে। মানুষের প্রকৃত গুণ বিপদে একে অপরের পাশে দাঁড়ানোয় প্রকাশ পায়। সবার প্রতি সহানুভূতিশীল হই, সহযোগিতার মনোভাব গড়ে তুলি।