
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শেখ শরীফুল ইসলামকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। বুধবার দিবাগত রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত সংকট নিরসন এবং শিক্ষা কার্যক্রম দ্রুত শুরু করার লক্ষ্যে কুয়েটের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অনতিবিলম্বে একটি সার্চ কমিটি গঠন করে নতুন উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হবে।”
এছাড়া বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের মধ্য থেকে একজনকে অস্থায়ীভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হবে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে কুয়েটে ছাত্রদল-যুবদল ও শিক্ষার্থী-এলাকাবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন। এর জেরে ২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ১৩ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে উত্তেজনা ফের বাড়ে।
১৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারির ঘটনায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে ২২ এপ্রিল থেকে আমরণ অনশন শুরু করেন। আন্দোলন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সংহতি জানিয়ে আলটিমেটাম দেন।
শিক্ষা উপদেষ্টা সরাসরি শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে গিয়ে ব্যর্থ হন। কুয়েট ভিসি একাধিকবার জানান, সরকারের নির্দেশ ছাড়া পদ ছাড়বেন না। অবশেষে সরকার কর্তৃক তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাকার্যক্রম পুনরায় শুরু এবং উত্তেজনা প্রশমনের পথ তৈরি করতে পারে। তবে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে প্রয়োজন হবে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণমূলক পরিবেশ।