কাশ্মীরের পহেলগাম অঞ্চলের বৈসারণ উপত্যকায় ২২ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে সংঘটিত এক ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ২৫ জন ভারতীয় এবং একজন নেপালি নাগরিক। এই হামলায় আহত হন আরও অন্তত ১৭ জন। হামলাটি পর্যটকদের লক্ষ্য করে চালানো হয়, যেখানে বন্দুকধারীরা পুরুষদের আলাদা করে গুলি চালায়। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স’ নামক একটি গোষ্ঠী, যা পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈবা সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে ।

এই হামলায় নিহতদের মধ্যে একমাত্র কাশ্মীরি ছিলেন সৈয়দ আদিল হুসেন শাহ। তিনি পহেলগামের হাপতনা গ্রামের বাসিন্দা এবং পেশায় একজন ঘোড়ার চালক ছিলেন। হামলার সময় তিনি পর্যটকদের রক্ষা করতে গিয়ে সাহসিকতার সঙ্গে প্রতিরোধের চেষ্টা করেন এবং হামলাকারীদের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এই বীরত্বপূর্ণ প্রচেষ্টার সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ।​

জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ আদিলের এই আত্মত্যাগের প্রশংসা করেন এবং তার পরিবারকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, “একজন দরিদ্র স্থানীয় শ্রমিক এই কাপুরুষোচিত হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন। তিনি সাহসী ছিলেন। পর্যটকদের বাঁচাতে গিয়ে তিনি প্রাণ দিয়েছেন” ।

আদিলের এই বীরত্বপূর্ণ কাজ দেশজুড়ে প্রশংসিত হয়েছে। বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া তার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে আদিলের সাহসিকতার কথা উল্লেখ করে বলেন, “এই নৃশংস হামলা মানবতার বিবেককে নাড়িয়ে দেওয়া উচিত। এটি আমাদের দীর্ঘদিন তাড়িত করবে” ।

এই হামলার পর ভারত সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস, ইন্দাস পানি চুক্তি স্থগিত এবং প্রধান সীমান্ত ক্রসিং বন্ধের মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এছাড়া, নিরাপত্তা বাহিনী হামলাকারীদের ধরতে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে ।​

সৈয়দ আদিল হুসেন শাহের আত্মত্যাগ কাশ্মীরের সাধারণ মানুষের সাহসিকতা এবং মানবতার প্রতীক হয়ে থাকবে। তার এই বীরত্বপূর্ণ কাজ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, সন্ত্রাস ও ঘৃণার বিরুদ্ধে ভালোবাসা ও সহানুভূতি আজও বেঁচে আছে।​