বাংলাদেশে গত আট মাসে ২৬টি নতুন রাজনৈতিক দল ও প্ল্যাটফর্মের আত্মপ্রকাশ নিঃসন্দেহে একটি লক্ষণীয় ঘটনা। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে—এই হঠাৎ রাজনৈতিক উত্তেজনার পেছনের উদ্দেশ্য কী?
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই দেশের রাজনীতিতে এক ধরনের শূন্যতা ও অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এই শূন্যস্থানকে পূরণ করতে এবং রাজনৈতিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার সুযোগ নিতে বহু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী দল গঠনে ঝুঁকেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এলেই "ব্যাঙের ছাতার মতো" দল গজিয়ে ওঠে। এর পেছনে মূলত:
যেমন রফিকুল আমীনের বক্তব্য স্পষ্ট করে, জেল থেকে ছাড়া পেতে বা রাজনৈতিক স্বীকৃতি পেতে "রাজনৈতিক লেবেল" দরকার। অর্থাৎ, রাজনীতিকে এখন অনেকে আইনি সুবিধা, সামাজিক প্রভাব ও রাজনৈতিক নিরাপত্তা অর্জনের এক পথ হিসেবে দেখছেন।
রাজনীতি এখন অনেকের কাছে একটি সহজলভ্য প্ল্যাটফর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে:
পুরনো দলগুলোর ওপর সাধারণ মানুষের আস্থার ঘাটতি এবং নতুন নেতৃত্বের খোঁজ অনেককেই নতুন প্ল্যাটফর্মে উদ্বুদ্ধ করেছে। বিশেষ করে শিক্ষার্থী নেতৃত্বের দল এনসিপি’র মতো কিছু উদ্যোগ আদর্শিক ভিত্তিতে শুরু হলেও বাকিগুলোর উদ্দেশ্য বিতর্কিত।
যদিও বহুদলীয় রাজনীতি গণতন্ত্রের ভিত্তি, বাস্তবে এগুলোর অনেকটাই আদর্শবিচ্যুত এবং স্বার্থনির্ভর বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাব্বির আহমেদের মতে, "রাজনীতি করলে দ্রুত টাকাপয়সা আর ব্যক্তিগত প্রভাব আসে—এই ভাবনাই মূল চালিকা শক্তি"।
বাংলাদেশের ইতিহাস বলছে, এ ধরনের হঠাৎ দল গঠনের অনেক উদাহরণ থাকলেও—টিকে থাকে হাতে গোনা কয়েকটি। বাকিগুলো একপর্যায়ে মিলিয়ে যায় বা বড় দলে বিলীন হয়।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ Abdus Salam
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।