ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে গাজায় প্রায় ৬,৬০,০০০ ফিলিস্তিনি শিশু প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়েছে, জানিয়েছে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা UNRWA। টানা ১৮ মাস ধরে চলমান এই আগ্রাসনে গাজার প্রায় সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হয় ধ্বংস হয়েছে, নয়তো বাস্তুচ্যুত পরিবারদের আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, গত ১৮ মাসে ইসরায়েলি হামলায় ১৮,০০০ এর বেশি শিশু শহীদ হয়েছে, যাদের মধ্যে ১৩,০০০ ছিল স্কুলের শিক্ষার্থী। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশাপাশি বাড়িঘর ও আশ্রয়কেন্দ্রও হামলার শিকার হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে যুদ্ধাপরাধের শামিল।
UNRWA সতর্ক করে জানায়, গাজার পুরো শিক্ষাব্যবস্থা কার্যত ধ্বংসপ্রাপ্ত। শিশুদের জন্য নিরাপদ শিক্ষার পরিবেশ এখন আর নেই। এতে শুধু যে তারা শিক্ষার মৌলিক অধিকার হারাচ্ছে তা নয়, বরং তাদের মানসিক স্বাস্থ্য, বিকাশ এবং ভবিষ্যৎ জীবনও চরম হুমকির মুখে পড়েছে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা বলছে, এখনই যুদ্ধবিরতি কার্যকর এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনের উদ্যোগ না নিলে পুরো একটি প্রজন্ম অশিক্ষিত, হতাশ ও সহিংসতার শিকার হয়ে উঠবে। সংস্থাগুলো শিক্ষা পুনরুদ্ধারকে মানবিক অগ্রাধিকারের শীর্ষে রাখার আহ্বান জানিয়েছে।
গাজায় স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়—সবই ইসরায়েলি সামরিক হামলার শিকার হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শুধুমাত্র ধ্বংসই হয়নি, বরং বহুক্ষেত্রে সেখানে থাকা শিশু ও পরিবারগুলো নিহত হয়েছে। শিক্ষা যখন আগ্রাসনের লক্ষ্যবস্তু হয়, তখন তা একটি জাতিকে অস্তিত্বহীন করে দেওয়ার কৌশল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
একটি জাতির ভবিষ্যৎ তার শিশুদের মাধ্যমে গড়ে ওঠে। গাজায় সেই ভবিষ্যৎকে ধ্বংস করা হচ্ছে। এখনই যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কার্যকর উদ্যোগ না নেয়, তাহলে গাজার একটি প্রজন্ম চিরতরে হারিয়ে যেতে পারে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ Abdus Salam
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।