ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-কে জানিয়েছেন, যদি ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ যুদ্ধবিরতির দিকে অগ্রসর হয়, তাহলে কিয়েভ রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় যেতে প্রস্তুত।
এই তথ্যটি প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক রাজনৈতিক সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস, একাধিক কূটনৈতিক সূত্রের বরাতে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে সম্প্রতি একটি “অপ্রকাশিত সংলাপ” অনুষ্ঠিত হয়। এই আলোচনায় ইউক্রেনের যুদ্ধবিরতি প্রসঙ্গে অবস্থান জানতে চান ট্রাম্প। উত্তরে জেলেনস্কি জানান:

“যদি বাস্তবসম্মত ও সুনির্দিষ্ট যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব আসে, ইউক্রেন আলোচনার পথে হাঁটতে রাজি।”

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার সামরিক আগ্রাসনের পর ইউক্রেনের সঙ্গে শুরু হওয়া যুদ্ধ এখনো চলমান। হাজার হাজার প্রাণহানি, লক্ষ লক্ষ বাস্তুচ্যুতি এবং শহরগুলোর ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়ার মধ্য দিয়েই যুদ্ধ গড়িয়েছে তৃতীয় বছরে।

পশ্চিমা সামরিক সহায়তা ও অর্থনির্ভরতা বজায় রেখেও ইউক্রেন সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দৃশ্যমান কৌশলগত অগ্রগতি দেখাতে পারেনি। বরং যুদ্ধ একটি স্থিতিশীল অচলাবস্থায় পৌঁছেছে, যার ফলে উভয় পক্ষেই চাপ সৃষ্টি হয়েছে আলোচনার বিষয়ে নতুন করে ভাবার।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং আসন্ন নির্বাচনেও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বহুবার প্রকাশ্যে দাবি করেছেন,

“আমি ক্ষমতায় ফিরলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে পারব।”

ট্রাম্পের এমন অবস্থানের প্রেক্ষিতে জেলেনস্কির বার্তাটি অনেকের কাছে কৌশলগত নমনীয়তার ইঙ্গিত হিসেবে দেখা যাচ্ছে। কারণ ইউক্রেনের সরকার পূর্বে বহুবার বলেছে, তারা কেবল তখনই আলোচনায় বসবে, যখন রুশ বাহিনী সম্পূর্ণভাবে ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড ত্যাগ করবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের যোগাযোগ ও অবস্থান পরিবর্তন যুদ্ধের একটি রাজনৈতিক সমাধানের সম্ভাবনাকে উসকে দিচ্ছে। তবে একইসঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে, যুদ্ধবিরতির বাস্তবতা ও রাশিয়ার সদিচ্ছা নিয়ে।

যদিও এখনো কোনো পক্ষই আনুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয়নি, তবুও কূটনৈতিক পরিসরে আলোচনার আবহ গড়ে উঠছে—যা যুদ্ধের ভবিষ্যৎ গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।