০৮:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুই শক্তিধর প্রতিদ্বন্দ্বীর দ্বন্দ্ব: দক্ষিণ এশিয়ায় যুদ্ধের ছায়া?

দক্ষিণ এশিয়া আবারও উত্তেজনার মুখোমুখি। পাকিস্তান দাবি করেছে যে ভারত তাদের তিনটি বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও ভারতের সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে ইসলামাবাদ। এই পাল্টাপাল্টি সামরিক আঘাত দুই দেশের দীর্ঘদিনের বৈরিতাকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাচ্ছে।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাওয়ালপিন্ডির নূর খান বিমানঘাঁটি সহ মোট তিনটি স্থাপনায় ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। ভারত এখনো এই হামলার সত্যতা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি, তবে সীমান্ত এলাকায় যুদ্ধবিমান ও ড্রোন কার্যক্রমের ব্যাপকতা বেড়েছে।

অন্যদিকে, পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতের দুটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে ও একটি সামরিক স্থাপনায় সফলভাবে পাল্টা আঘাত হেনেছে। যদিও ভারত এই দাবিকে “অতিরঞ্জিত” বলে অভিহিত করেছে।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার শিকড় কাশ্মীর ইস্যুতে। ২০১৯ সালে ভারতের তরফে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক আরও খারাপ হয়েছে। সীমান্তে প্রায় নিয়মিত সংঘর্ষ, সেনা নিহত হওয়া এবং যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা নতুন কিছু নয়।

দুই দেশই পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত। এমন প্রেক্ষাপটে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও পাল্টা হামলার মতো পদক্ষেপ শুধু ভারত ও পাকিস্তান নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়া তথা বিশ্বশান্তির জন্য হুমকি।

  • অর্থনৈতিক ঝুঁকি: এই সংঘাতের প্রভাবে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। বিদেশি বিনিয়োগ ও বাজারের আস্থা কমে যেতে পারে।
  • মানবিক সংকট: সীমান্তবর্তী এলাকায় সাধারণ মানুষের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ইতোমধ্যে হাজারো পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ঘর ছাড়ছে।
  • কূটনৈতিক চাপ: জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়া এই সংঘাত প্রশমনের জন্য দ্বিপক্ষীয় সংলাপের আহ্বান জানাচ্ছে।

এই উত্তেজনা যদি সীমাবদ্ধ না থাকে, তাহলে তা একটি বড় আকারের যুদ্ধের দিকে গড়াতে পারে। বিশেষ করে যখন দুই পক্ষই “জাতীয় নিরাপত্তা”র প্রশ্নে আপসহীন থাকে। কূটনৈতিক সমাধান এবং আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা ছাড়া উত্তেজনা প্রশমনের পথ খুব সংকীর্ণ।

 

ভারত ও পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘাত দক্ষিণ এশিয়ার জনগণের জন্য এক নতুন অনিশ্চয়তার সূত্রপাত করেছে। এখন সময় এসেছে দুই দেশ তাদের রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রদর্শন করে সংলাপের মাধ্যমে উত্তেজনা নিরসনের পথ খুঁজে বের করে।

লেখক: [নাতাশা মুন্নি]

ট্যাগ
জনপ্রিয় সংবাদ

দুই শক্তিধর প্রতিদ্বন্দ্বীর দ্বন্দ্ব: দক্ষিণ এশিয়ায় যুদ্ধের ছায়া?

প্রকাশিত হয়েছে: ১১:১৯:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

দক্ষিণ এশিয়া আবারও উত্তেজনার মুখোমুখি। পাকিস্তান দাবি করেছে যে ভারত তাদের তিনটি বিমানঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও ভারতের সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে ইসলামাবাদ। এই পাল্টাপাল্টি সামরিক আঘাত দুই দেশের দীর্ঘদিনের বৈরিতাকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাচ্ছে।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাওয়ালপিন্ডির নূর খান বিমানঘাঁটি সহ মোট তিনটি স্থাপনায় ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। ভারত এখনো এই হামলার সত্যতা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি, তবে সীমান্ত এলাকায় যুদ্ধবিমান ও ড্রোন কার্যক্রমের ব্যাপকতা বেড়েছে।

অন্যদিকে, পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতের দুটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে ও একটি সামরিক স্থাপনায় সফলভাবে পাল্টা আঘাত হেনেছে। যদিও ভারত এই দাবিকে “অতিরঞ্জিত” বলে অভিহিত করেছে।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার শিকড় কাশ্মীর ইস্যুতে। ২০১৯ সালে ভারতের তরফে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক আরও খারাপ হয়েছে। সীমান্তে প্রায় নিয়মিত সংঘর্ষ, সেনা নিহত হওয়া এবং যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা নতুন কিছু নয়।

দুই দেশই পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত। এমন প্রেক্ষাপটে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও পাল্টা হামলার মতো পদক্ষেপ শুধু ভারত ও পাকিস্তান নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়া তথা বিশ্বশান্তির জন্য হুমকি।

  • অর্থনৈতিক ঝুঁকি: এই সংঘাতের প্রভাবে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। বিদেশি বিনিয়োগ ও বাজারের আস্থা কমে যেতে পারে।
  • মানবিক সংকট: সীমান্তবর্তী এলাকায় সাধারণ মানুষের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ইতোমধ্যে হাজারো পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ঘর ছাড়ছে।
  • কূটনৈতিক চাপ: জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়া এই সংঘাত প্রশমনের জন্য দ্বিপক্ষীয় সংলাপের আহ্বান জানাচ্ছে।

এই উত্তেজনা যদি সীমাবদ্ধ না থাকে, তাহলে তা একটি বড় আকারের যুদ্ধের দিকে গড়াতে পারে। বিশেষ করে যখন দুই পক্ষই “জাতীয় নিরাপত্তা”র প্রশ্নে আপসহীন থাকে। কূটনৈতিক সমাধান এবং আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা ছাড়া উত্তেজনা প্রশমনের পথ খুব সংকীর্ণ।

 

ভারত ও পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘাত দক্ষিণ এশিয়ার জনগণের জন্য এক নতুন অনিশ্চয়তার সূত্রপাত করেছে। এখন সময় এসেছে দুই দেশ তাদের রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রদর্শন করে সংলাপের মাধ্যমে উত্তেজনা নিরসনের পথ খুঁজে বের করে।

লেখক: [নাতাশা মুন্নি]