০৭:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

“নিয়তের উপর নির্ভর করে প্রতিটি কাজের মূল্য”

📘 হাদিস: সহীহ মুসলিম, প্রথম দিকেই রয়েছে)

عَنْ أَمِيرِ الْمُؤْمِنِينَ أَبِي حَفْصٍ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رضي الله عنه قَالَ:

سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ يَقُولُ:

«إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ، وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى، فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ، فَهِجْرَتُهُ إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ، وَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ لِدُنْيَا يُصِيبُهَا أَوِ امْرَأَةٍ يَنكِحُهَا، فَهِجْرَتُهُ إِلَى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ».

🔍 বাংলা অনুবাদ:

আমীরুল মু’মিনীন আবু হাফস উমর ইবনুল খাত্তাব (রাযি.) বলেন:
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি:

“নিশ্চয়ই সমস্ত কাজ (এর ফলাফল) নিয়তের ওপর নির্ভরশীল, আর প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য তাই থাকবে যা সে নিয়ত করেছে। তাই যার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উদ্দেশ্যে, তার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকেই। আর যার হিজরত দুনিয়াবি কোনো উপার্জনের জন্য বা কোনো নারীকে বিয়ের উদ্দেশ্যে, তবে তার হিজরত সেই উদ্দেশ্যেই হবে, যার জন্য সে হিজরত করেছে।”

সহীহ বুখারী: হাদিস ১ | সহীহ মুসলিম: শুরুতেই এই হাদিস রয়েছে (মুত্তাফাকুন আলাইহি)

এই হাদিসটি ইসলামের একটি মূলনীতি হিসেবে বিবেচিত হয়, এবং অনেক মুহাদ্দিস (হাদিস বিশারদ) এটিকে ইসলামী জ্ঞানের ভিত্তি বলে উল্লেখ করেছেন।

📖 হাদিসের মূল বক্তব্য:

“সমস্ত কাজ নিয়তের উপর নির্ভরশীল।”
অর্থাৎ, আল্লাহর কাছে কোনো আমলের মূল্য সেই কাজের বাহ্যিক রূপ নয়, বরং তার অন্তরের উদ্দেশ্য ও নিয়তের উপর নির্ভর করে। একেই বলে “ইখলাস” (সিনসিয়ারিটি)।

১. নিয়ত কী?

নিয়ত হলো—কোনো কাজ করার পেছনে অন্তরের উদ্দেশ্য বা অভিপ্রায়।
উদাহরণ: আপনি যদি দরিদ্রদের সাহায্য করেন—তা কি লোক দেখানোর জন্য, না আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য?

২. একই কাজ, ভিন্ন ফলাফল:

এই হাদিসে একটি বাস্তব উদাহরণও দেওয়া হয়েছে—হিজরত (দেশান্তর):

কেউ হিজরত করল আল্লাহ ও রাসূলের ডাকে সাড়া দিয়ে ⇒ সে পূর্ণ সওয়াব পাবে।

কেউ হিজরত করল চাকরি পাওয়ার জন্য বা বিয়ের উদ্দেশ্যে ⇒ সে দুনিয়াবি উদ্দেশ্য পূরণ পাবে, কিন্তু আখিরাতে সে সওয়াব পাবে না।

৩. এই হাদিস কেন গুরুত্বপূর্ণ?

এটি মুসলমানের প্রতিটি কাজের মুল্যায়নের মানদণ্ড নির্ধারণ করে।

অনেক মুহাদ্দিস বলেন: “এই হাদিসটি ইসলামের এক-তৃতীয়াংশ জ্ঞানের সমান।”

ইমাম নববী (রহ.) তাঁর “ الأربعون النووية” (চল্লিশ হাদিস) গ্রন্থে এটিকেই প্রথমে রেখেছেন।

💡 বাস্তব জীবনের শিক্ষা:

বিষয় ভালো নিয়ত থাকলে খারাপ বা লোক দেখানো হলে
নামাজ ইবাদত, সওয়াব রিয়া (লোক দেখানো), গুনাহ
দান সাদকা, রহমত অহংকার, শাস্তি হতে পারে
পড়াশোনা জ্ঞান অর্জন, ইবাদত শুধুই ডিগ্রি বা খ্যাতি

এই হাদিস আমাদের মনে করিয়ে দেয়—আমলের বাহ্যিক রূপ নয়, বরং হৃদয়ের উদ্দেশ্যই আল্লাহর কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
তাই, সব কাজের আগে আমাদের নিয়ত ঠিক করা উচিত:
👉 আমি আল্লাহর জন্যই করছি?”

ট্যাগ
পোস্টকারীর সকল তথ্য

📰 ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা: যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

“নিয়তের উপর নির্ভর করে প্রতিটি কাজের মূল্য”

প্রকাশিত হয়েছে: ০৭:৫৪:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

📘 হাদিস: সহীহ মুসলিম, প্রথম দিকেই রয়েছে)

عَنْ أَمِيرِ الْمُؤْمِنِينَ أَبِي حَفْصٍ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رضي الله عنه قَالَ:

سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ يَقُولُ:

«إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ، وَإِنَّمَا لِكُلِّ امْرِئٍ مَا نَوَى، فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ، فَهِجْرَتُهُ إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ، وَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ لِدُنْيَا يُصِيبُهَا أَوِ امْرَأَةٍ يَنكِحُهَا، فَهِجْرَتُهُ إِلَى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ».

🔍 বাংলা অনুবাদ:

আমীরুল মু’মিনীন আবু হাফস উমর ইবনুল খাত্তাব (রাযি.) বলেন:
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি:

“নিশ্চয়ই সমস্ত কাজ (এর ফলাফল) নিয়তের ওপর নির্ভরশীল, আর প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য তাই থাকবে যা সে নিয়ত করেছে। তাই যার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উদ্দেশ্যে, তার হিজরত আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকেই। আর যার হিজরত দুনিয়াবি কোনো উপার্জনের জন্য বা কোনো নারীকে বিয়ের উদ্দেশ্যে, তবে তার হিজরত সেই উদ্দেশ্যেই হবে, যার জন্য সে হিজরত করেছে।”

সহীহ বুখারী: হাদিস ১ | সহীহ মুসলিম: শুরুতেই এই হাদিস রয়েছে (মুত্তাফাকুন আলাইহি)

এই হাদিসটি ইসলামের একটি মূলনীতি হিসেবে বিবেচিত হয়, এবং অনেক মুহাদ্দিস (হাদিস বিশারদ) এটিকে ইসলামী জ্ঞানের ভিত্তি বলে উল্লেখ করেছেন।

📖 হাদিসের মূল বক্তব্য:

“সমস্ত কাজ নিয়তের উপর নির্ভরশীল।”
অর্থাৎ, আল্লাহর কাছে কোনো আমলের মূল্য সেই কাজের বাহ্যিক রূপ নয়, বরং তার অন্তরের উদ্দেশ্য ও নিয়তের উপর নির্ভর করে। একেই বলে “ইখলাস” (সিনসিয়ারিটি)।

১. নিয়ত কী?

নিয়ত হলো—কোনো কাজ করার পেছনে অন্তরের উদ্দেশ্য বা অভিপ্রায়।
উদাহরণ: আপনি যদি দরিদ্রদের সাহায্য করেন—তা কি লোক দেখানোর জন্য, না আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য?

২. একই কাজ, ভিন্ন ফলাফল:

এই হাদিসে একটি বাস্তব উদাহরণও দেওয়া হয়েছে—হিজরত (দেশান্তর):

কেউ হিজরত করল আল্লাহ ও রাসূলের ডাকে সাড়া দিয়ে ⇒ সে পূর্ণ সওয়াব পাবে।

কেউ হিজরত করল চাকরি পাওয়ার জন্য বা বিয়ের উদ্দেশ্যে ⇒ সে দুনিয়াবি উদ্দেশ্য পূরণ পাবে, কিন্তু আখিরাতে সে সওয়াব পাবে না।

৩. এই হাদিস কেন গুরুত্বপূর্ণ?

এটি মুসলমানের প্রতিটি কাজের মুল্যায়নের মানদণ্ড নির্ধারণ করে।

অনেক মুহাদ্দিস বলেন: “এই হাদিসটি ইসলামের এক-তৃতীয়াংশ জ্ঞানের সমান।”

ইমাম নববী (রহ.) তাঁর “ الأربعون النووية” (চল্লিশ হাদিস) গ্রন্থে এটিকেই প্রথমে রেখেছেন।

💡 বাস্তব জীবনের শিক্ষা:

বিষয় ভালো নিয়ত থাকলে খারাপ বা লোক দেখানো হলে
নামাজ ইবাদত, সওয়াব রিয়া (লোক দেখানো), গুনাহ
দান সাদকা, রহমত অহংকার, শাস্তি হতে পারে
পড়াশোনা জ্ঞান অর্জন, ইবাদত শুধুই ডিগ্রি বা খ্যাতি

এই হাদিস আমাদের মনে করিয়ে দেয়—আমলের বাহ্যিক রূপ নয়, বরং হৃদয়ের উদ্দেশ্যই আল্লাহর কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
তাই, সব কাজের আগে আমাদের নিয়ত ঠিক করা উচিত:
👉 আমি আল্লাহর জন্যই করছি?”