০১:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি,পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল বরদাস্ত নয়: মোদি

কাশ্মিরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক যুদ্ধ পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোমবার রাতে জাতির উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দিয়েছেন। রাত ৮টার দিকে সম্প্রচারিত ভাষণে তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান ঘোষণা করেন এবং বলেন, “ভারত কোনও ধরনের পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল সহ্য করবে না।”

প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর ভাষণের শুরুতেই পেহেলগামে নিহত নিরীহ মানুষদের স্মরণ করে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর দ্রুত ও সফল জবাবি পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “একজন নারীর সিঁদুর মুছে ফেলার মূল্য কতটা চড়া হতে পারে, তা সশস্ত্র বাহিনীর পদক্ষেপে নিশ্চিত হয়েছে।” এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় পরিচালিত ‘অপারেশন সিঁদুর’ কে তিনি জাতির আবেগ ও ন্যায়ের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “এটা শুধু একটি নাম নয়, এটা দেশের মা, বোন ও কন্যাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও প্রতিজ্ঞার প্রতিফলন।”

ভাষণে মোদি দাবি করেন, ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ঢুকে “সন্ত্রাসের বিশ্ববিদ্যালয়” ধ্বংস করেছে এবং “মাত্র তিন দিনে পাকিস্তানকে অকল্পনীয় ক্ষয়ক্ষতির মুখে ফেলেছে।” তিনি বলেন, বাহাওয়ালপুর ও মুরিদকেতে ভারতীয় ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় শতাধিক সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।

মোদি বলেন, “সন্ত্রাস এবং আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না। সন্ত্রাস ও বাণিজ্য একসঙ্গে চলতে পারে না। পানি এবং রক্তও একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না।” তিনি ইঙ্গিত দেন, ভারতের সামরিক অভিযান কেবলমাত্র “স্থগিত” রয়েছে—যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ পাকিস্তানের পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর নির্ভর করবে।

ভাষণে প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের সমর্থনের অভিযোগও তোলেন। তিনি বলেন, “বিশ্ব এখন পাকিস্তানের কুৎসিত চেহারা দেখে ফেলেছে। পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তারা সন্ত্রাসীদের জানাজায় অংশ নিয়েছেন।”

মোদি স্পষ্ট করেন, ভবিষ্যতে ভারত-পাকিস্তান আলোচনা হলে তা কেবল সন্ত্রাস দমন এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মির নিয়েই হবে। “শান্তির পথ শক্তির মধ্য দিয়েই তৈরি হয়”—এই বার্তা দিয়ে তিনি ভারতের কৌশলগত অবস্থান আবারও নিশ্চিত করেন।

🔎 বিশ্লেষণ:
এই ভাষণ শুধুই একটি প্রতিক্রিয়া নয়—এটি ভারতের ঘরোয়া মনোভাব দৃঢ় করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানকে কূটনৈতিক চাপে রাখার একটি পরিকল্পিত কৌশল। মোদি প্রশাসন দেখাতে চায় যে, ভারত এখন আত্মরক্ষামূলক নীতি নয়, আক্রমণাত্মক প্রতিরক্ষা (offensive defence) নীতি অনুসরণ করছে।

ট্যাগ
জনপ্রিয় সংবাদ

পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি,পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল বরদাস্ত নয়: মোদি

প্রকাশিত হয়েছে: ১০:০৩:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫

কাশ্মিরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক যুদ্ধ পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোমবার রাতে জাতির উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দিয়েছেন। রাত ৮টার দিকে সম্প্রচারিত ভাষণে তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান ঘোষণা করেন এবং বলেন, “ভারত কোনও ধরনের পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল সহ্য করবে না।”

প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর ভাষণের শুরুতেই পেহেলগামে নিহত নিরীহ মানুষদের স্মরণ করে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর দ্রুত ও সফল জবাবি পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “একজন নারীর সিঁদুর মুছে ফেলার মূল্য কতটা চড়া হতে পারে, তা সশস্ত্র বাহিনীর পদক্ষেপে নিশ্চিত হয়েছে।” এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় পরিচালিত ‘অপারেশন সিঁদুর’ কে তিনি জাতির আবেগ ও ন্যায়ের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “এটা শুধু একটি নাম নয়, এটা দেশের মা, বোন ও কন্যাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও প্রতিজ্ঞার প্রতিফলন।”

ভাষণে মোদি দাবি করেন, ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ঢুকে “সন্ত্রাসের বিশ্ববিদ্যালয়” ধ্বংস করেছে এবং “মাত্র তিন দিনে পাকিস্তানকে অকল্পনীয় ক্ষয়ক্ষতির মুখে ফেলেছে।” তিনি বলেন, বাহাওয়ালপুর ও মুরিদকেতে ভারতীয় ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় শতাধিক সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।

মোদি বলেন, “সন্ত্রাস এবং আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না। সন্ত্রাস ও বাণিজ্য একসঙ্গে চলতে পারে না। পানি এবং রক্তও একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না।” তিনি ইঙ্গিত দেন, ভারতের সামরিক অভিযান কেবলমাত্র “স্থগিত” রয়েছে—যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ পাকিস্তানের পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর নির্ভর করবে।

ভাষণে প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের সমর্থনের অভিযোগও তোলেন। তিনি বলেন, “বিশ্ব এখন পাকিস্তানের কুৎসিত চেহারা দেখে ফেলেছে। পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তারা সন্ত্রাসীদের জানাজায় অংশ নিয়েছেন।”

মোদি স্পষ্ট করেন, ভবিষ্যতে ভারত-পাকিস্তান আলোচনা হলে তা কেবল সন্ত্রাস দমন এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মির নিয়েই হবে। “শান্তির পথ শক্তির মধ্য দিয়েই তৈরি হয়”—এই বার্তা দিয়ে তিনি ভারতের কৌশলগত অবস্থান আবারও নিশ্চিত করেন।

🔎 বিশ্লেষণ:
এই ভাষণ শুধুই একটি প্রতিক্রিয়া নয়—এটি ভারতের ঘরোয়া মনোভাব দৃঢ় করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানকে কূটনৈতিক চাপে রাখার একটি পরিকল্পিত কৌশল। মোদি প্রশাসন দেখাতে চায় যে, ভারত এখন আত্মরক্ষামূলক নীতি নয়, আক্রমণাত্মক প্রতিরক্ষা (offensive defence) নীতি অনুসরণ করছে।