
রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় স্ট্যাভ্রোপল অঞ্চলের ট্রাফিক পুলিশের সাবেক প্রধান আলেক্সি সাফোনভ-কে এক চাঞ্চল্যকর দুর্নীতির মামলায় ২০ বছরের কঠোর শাসন এবং ১০০ মিলিয়ন রুবেল জরিমানা করেছে দেশটির একটি আদালত।
সাফোনভের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি দীর্ঘদিন ধরে একটি প্রভাবশালী অপরাধ চক্র পরিচালনা করতেন, যেখানে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ট্রাক মালিকদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে ট্রাফিক পারমিট, রেজিস্ট্রেশন এবং নজরদারি এড়াতে সুবিধা দিতেন। বিচার প্রক্রিয়ার সময় রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করে যে তিনি ও তার সহযোগীরা ১০০টিরও বেশি দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।
২০২১ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার সময় তার বাড়িতে চালানো তল্লাশি থেকে উঠে আসে এক অবিশ্বাস্য জীবনযাত্রার চিত্র।
সোনালী রঙের টয়লেট, ঝলমলে সিঙ্ক, মার্বেল-ঘেরা বাথরুম এবং দামী ঝাড়বাতিসহ একটি সম্পূর্ণ প্রাসাদসদৃশ বাড়ি দেখে জনগণ হতবাক হয়ে যায়।
সেই সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় এ বাড়ির ছবি ভাইরাল হয়, এবং “সোনার টয়লেট কেলেঙ্কারি” হিসেবে পরিচিতি পায় সাফোনভ কাণ্ড।
এই রায়কে রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতির একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ভ্লাদিমির পুতিন প্রশাসন বেশ কিছুদিন ধরেই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতি রোধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। তবে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, এই কঠোরতা আসলে কী সর্বব্যাপী, নাকি শুধুমাত্র কিছু “দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির” মধ্যে সীমাবদ্ধ।
রাশিয়ার দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা Transparency International Russia এক বিবৃতিতে বলেছে,
“এই রায় উৎসাহব্যঞ্জক, তবে একই ধরনের অন্য মামলাগুলোতেও বিচারপ্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা দরকার।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই শাস্তি শুধু একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নয়, বরং এটি একটি রাজনৈতিক বার্তা — বিশেষত এমন সময়ে যখন রাশিয়ায় প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিয়ে বিশ্বব্যাপী সমালোচনা বাড়ছে।