হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন,
এক ব্যক্তি হযরত আবু বকর (রাঃ)-কে বাজে কথা বলছিলেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন এবং মুচকি মুচকি হাসছিলেন।
অবশেষে, আবু বকর (রাঃ) কিছুটা জবাব দিলে,
নবী করীম ﷺ রাগান্বিত হয়ে উঠে চলে যান।
পরে আবু বকর (রাঃ) নবীজীকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন:
“তুমি যখন চুপ ছিলে, তখন একজন ফেরেশতা তোমার পক্ষে জবাব দিচ্ছিল। কিন্তু তুমি যখন নিজে উত্তর দিতে শুরু করলে, তখন ফেরেশতা চলে যায় এবং শয়তান সেখানে আসে। আমি শয়তানের সঙ্গে বসে থাকতে পারি না।”
📚 (মিশকাতুল মাসাবীহ, হাদীস নং: ৫১০৭)
১. ধৈর্য ও নীরবতা কত বড় গুণ
যখন আমরা কারো অপমান, গালি বা অন্যায় আচরণে নিজেকে সংবরণ করি, তখন আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য আসে — এমনকি ফেরেশতা আমাদের পক্ষ হয়ে কথা বলেন। এই হাদীসে ফেরেশতার পক্ষ থেকে উত্তর দেওয়ার বিষয়টি এক অলৌকিক সম্মান ও ইঙ্গিত যে, ধৈর্য আল্লাহর নৈকট্যের লক্ষণ।
২. রাগের জবাব দিলে শয়তান ঢুকে পড়ে
যখন আবু বকর (রাঃ) জবাব দিলেন, তখন শয়তান এসে উপস্থিত হয় — যা আমাদের শেখায়, রাগের প্রতিক্রিয়া আমাদের আত্মাকে কলুষিত করে এবং শয়তানকে সুযোগ দেয়। এ কারণে রাসূল (সা.) সরে গিয়েছিলেন।
৩. রাসূল ﷺ এর চারিত্রিক শিক্ষা
তিনি কেবল ধৈর্য শেখাননি, নিজেই তা অনুসরণ করেছেন। তিনি জানিয়ে দিলেন — শয়তানের উপস্থিতিতে থাকা নবী বা মুমিনের কাজ নয়। এই রকম পরিস্থিতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়াই উত্তম।
৪. মানবিক সম্মান ও আত্মসম্মান রক্ষা কিভাবে করতে হয়
আবু বকর (রাঃ) ছিলেন খলিফা এবং একজন সম্মানিত সাহাবী। তিনি যদি চুপ থাকতে পারেন এবং ফেরেশতার সাহায্য পান — তাহলে আমাদের শিক্ষা নেওয়া আরও জরুরি।
এই হাদীস আমাদের শেখায়,
➡️ অন্যায় হলে জবাব দেওয়া বৈধ, কিন্তু চুপ থাকলে তা আরও ফজিলতের কাজ।
➡️ ধৈর্য ধারণ করলে আসমান থেকে সাহায্য আসে।
➡️ প্রতিশোধ নয়, সংযমই প্রকৃত শক্তি।
রাসূল (সা.)-এর নীতিই ছিল:
"শক্তিশালী সেই ব্যক্তি নয় যে কুস্তিতে অপরকে হারায়, বরং প্রকৃত শক্তিমান সেই ব্যক্তি যে রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।" (সহীহ বুখারী)
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ Abdus Salam
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।