
চলমান সংকটের মধ্যেই ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) ট্রাস্টি বোর্ড অসন্তুষ্ট শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এই চিঠিতে শিক্ষার্থীদের আগামী ২৬ মের মধ্যে ভর্তি বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। চিঠিতে জানানো হয়, নির্ধারিত সময়ে আবেদন করলে চলতি সেমিস্টারে পরিশোধ করা টিউশন ফি সম্পূর্ণ ফেরত দেওয়া হবে।
ট্রাস্টি বোর্ড জানিয়েছে, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা ও পরিচালনা নিয়ে সন্তুষ্ট নন, তারা নির্ধারিত সময়ে আবেদন করলে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থার মুখোমুখি হবেন না। তবে গত ২৬ এপ্রিল রাতে উপাচার্য ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। প্রমাণ মিললে ডিসিপ্লিনারি কমিটির মাধ্যমে শাস্তি, এমনকি বহিষ্কারের মতো পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। তবে অভিযুক্ত কেউ যদি নির্ধারিত সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় ত্যাগ করেন, তবে তিনি শাস্তির আওতা থেকে রেহাই পাবেন।
চিঠিতে বোর্ড দাবি করে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা ও নীতিমালায় কোনো গোপনীয়তা নেই এবং অধিকাংশ শিক্ষার্থী শিক্ষার মানে সন্তুষ্ট। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করছে এমন একটি ছোট অংশের কারণে বাকিদের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়ছে বলেও উল্লেখ করা হয়।
ট্রাস্টি বোর্ড তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানায়, একাডেমিক মান রক্ষায় কোনো আপস করা হবে না এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশে কোনো অরাজকতা সহ্য করা হবে না।
চিঠিতে আরও জানানো হয়, ইউনাইটেড গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চমানের শিক্ষা ও গবেষণায় অঙ্গীকারবদ্ধ। ইউনাইটেড গ্রুপ প্রতিবছর গবেষণা ও ছাত্রকল্যাণে আর্থিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে, যার মধ্যে ‘ইউআইইউ ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ’-কে পাঁচ বছরে মোট ১০ কোটি টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি অন্তর্ভুক্ত।
ভর্তি বাতিলে আগ্রহীদের নির্ধারিত ফর্ম পূরণ করে admission_cancellation@uiu.ac.bd ঠিকানায় পাঠাতে বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ফর্ম শিক্ষার্থীদের ই-মেইলেও পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল ‘ইউআইইউ রিফর্ম’ নামে একটি আন্দোলনের জেরে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবুল কাশেম মিয়া পদত্যাগ করেন। পরবর্তীতে একযোগে ডিন, বিভাগীয় প্রধানসহ মোট ১১ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদত্যাগ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কার্যত অচল হয়ে পড়ে। এর প্রেক্ষিতে ২৮ এপ্রিল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
পরবর্তীতে ট্রাস্টি বোর্ড সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মো. মুজিবুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করে। তবে নির্ধারিত সময়ে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ থাকলেও এখনও তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।