নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন মানবতার শ্রেষ্ঠ আদর্শ। তাঁর চরিত্র ও গুণাবলি এতই মহান যে কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তা‘আলা ঘোষণা করেছেন:
"وَإِنَّكَ لَعَلَىٰ خُلُقٍ عَظِيمٍ"
“আর নিশ্চয়ই আপনি মহান চরিত্রের অধিকারী।”
সূরা আল-কালাম, আয়াত ৪
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: كَانَ خُلُقُهُ الْقُرْآنَ
সহীহ মুসলিম, হাদিস: ৭৪৬
বাংলা অনুবাদ:
হজরত আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) বলেন:
“রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চরিত্র ছিল কুরআন।”
এই সংক্ষিপ্ত কিন্তু গভীর অর্থবোধক হাদিসটি রাসূল (সা.)-এর ব্যক্তিত্ব ও নৈতিক উৎকর্ষতার একটি পরিপূর্ণ চিত্র তুলে ধরে। হজরত আয়েশা (রা.), যিনি ঘরোয়া জীবনে নবীজি (সা.)-এর সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ ছিলেন, তিনি যখন রাসূল (সা.)-এর চরিত্র বর্ণনা করতে চাইলেন, তখন তিনি বললেন—“তাঁর চরিত্র ছিল কুরআন।” এই কথাটি এমন একটি সারসংক্ষেপ, যা সমগ্র সীরাতকে (জীবনচরিতকে) ধারণ করে।
কুরআন মানবজাতির জন্য একটি পরিপূর্ণ জীবনবিধান। রাসূলুল্লাহ (সা.) ছিলেন সেই জীবন্ত বাস্তবতা, যিনি কুরআনের নির্দেশনাগুলোকে নিখুঁতভাবে নিজের জীবনে বাস্তবায়ন করেছিলেন। তিনি কুরআনের আদেশ-নিষেধ শুধু মুখে বলেননি, তিনি সেগুলোকে নিজের আচার-আচরণ, ভাবনা-চিন্তা, সম্পর্ক, বিচার-বিবেচনা, এবং জীবনযাপনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অনুসরণ করেছেন।
আসলে কুরআনের গভীর শিক্ষা বোঝার জন্য রাসূল (সা.)-এর জীবনকেই দেখতে হয়। তাঁর মুখের কথা, হাতের ব্যবহার, রাগ-অনুরাগের ধরন, আত্মীয়তা রক্ষা, শত্রু-মিত্রের সঙ্গে আচরণ—সব কিছুতেই কুরআনের ছাপ ছিল। তিনি ছিলেন "চলমান কুরআন" (القرآن يمشي)।
এই হাদিস আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেয়: যদি কেউ সত্যিকার অর্থে কুরআনের অনুসারী হতে চায়, তাহলে তাকে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন অধ্যয়ন করতে হবে এবং তাঁর মতো জীবন যাপন করতে হবে। কারণ তিনি কুরআনের বাস্তব রূপ—তাঁর চরিত্রে কুরআনকে দেখা যায়, আর কুরআনে তাঁর চরিত্রের প্রতিফলন পাওয়া যায়।
প্রকাশক ও সম্পাদক
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।