
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনসহ দেশের বেশ কিছু স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের অনুপস্থিতিতে নাগরিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। তারা জানান, প্রশাসনিক কর্মকর্তারা সীমিত পরিসরে রুটিন কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় সেবা কার্যক্রমে বৈকল্য ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদেশ সফরের তিন দিনের মাথায় ৮ আগস্ট ক্ষমতা গ্রহণ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার। এর ১১ দিনের মাথায়, ১৯ আগস্ট একযোগে দেশের ১২ সিটি করপোরেশন ও ৩২৩ পৌরসভার মেয়রদের অপসারণ করা হয়। পরে ২৬ সেপ্টেম্বর অপসারণ করা হয় সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরদেরও।
সরকার এরপর প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের দিয়ে মেয়র ও কাউন্সিলরদের দায়িত্ব পালনের চেষ্টা চালায়। তবে বাস্তবে এদের পক্ষে জনপ্রতিনিধিদের মতো করে জনগণের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত থেকে কার্যকর সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।
এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় সরকার বিভাগ দ্রুত সিটি ও পৌর নির্বাচনের আয়োজনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে করে শূন্য পদে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের পথ প্রশস্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মেয়র পদে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে তার সমর্থকরা এক সপ্তাহ ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস বিজয়ী হন। কিন্তু নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল ২০২৫ সালের ২৭ মার্চ তাপসের জয় বাতিল করে ইশরাক হোসেনকে বৈধ মেয়র ঘোষণা করে। ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করলেও এখনো ইশরাকের শপথ অনুষ্ঠান হয়নি।
তার সমর্থকরা বলছেন, দীর্ঘ বিলম্ব ইচ্ছাকৃত এবং এটি গণতান্ত্রিক রায় বাস্তবায়নে বাধা।
নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের অনুপস্থিতি স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় বড় ধরনের শূন্যতা ও প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি করেছে। এই অবস্থায় দ্রুত নির্বাচন আয়োজন এবং ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক বৈধ ঘোষণা পাওয়া ব্যক্তিদের শপথ গ্রহণ কার্যকর করার মাধ্যমে পরিস্থিতির সমাধান চায় জনগণ।