০৬:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের উপর নির্ভরতা কমাতে রেলপথে নতুন জোট গড়ছে ভারত

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের সংযোগে একমাত্র স্থলপথ হলো ২২ কিলোমিটার প্রশস্ত শিলিগুড়ি করিডর, যা “চিকেনস নেক” নামে পরিচিত। এই করিডরের উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কৌশলগতভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ভারত সরকার বিকল্প রেলপথ স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

🇮🇳 ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য নতুন রেলপথ পরিকল্পনা

১. বাংলাদেশ হয়ে বিকল্প রেলপথ

ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য চুক্তি ১৯৮০-এর আওতায় ১৪টি নতুন রেলপথের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যার মোট দৈর্ঘ্য ৮৬১ কিলোমিটার। এতে গেজ পরিবর্তন ও নতুন ট্র্যাক নির্মাণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের বিকল্প সংযোগ স্থাপন করবে ।

২. নেপাল ও ভুটানের মাধ্যমে সংযোগ

বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কারণে ভারত নেপাল ও ভুটানের মাধ্যমে বিকল্প রেলপথ স্থাপনের পরিকল্পনা করছে। এই উদ্যোগে উত্তর প্রদেশ ও বিহারে রেললাইন দ্বিগুণ বা চারগুণ করার জন্য জরিপ কাজ চলছে ।

৩. সিভোক-রাংপো রেললাইন

পশ্চিমবঙ্গের সিভোক থেকে সিকিমের রাংপো পর্যন্ত ৪৪.৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেললাইন নির্মাণাধীন। এটি ভবিষ্যতে গ্যাংটক ও নাথুলা পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে, যা কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ।

৪. পাটনা-গুয়াহাটি হাই-স্পিড রেল করিডর

৮৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই হাই-স্পিড রেল লাইন পাটনা থেকে গুয়াহাটি পর্যন্ত চলবে, যা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের দ্রুত সংযোগ স্থাপন করবে ।

⚡ বিদ্যুতায়িত রেল পরিষেবা

উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে (NFR) আগরতলা (ত্রিপুরা) থেকে অরুণাচল স্টেশন (আসাম) পর্যন্ত বিদ্যুতায়িত যাত্রীবাহী ট্রেনের পরীক্ষামূলক চালনা শুরু করেছে। এই উদ্যোগটি ২০২২ সালে শুরু হওয়া ৪৬ কোটি টাকার বিদ্যুতায়ন প্রকল্পের অংশ, যা ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতের রেল নেটওয়ার্ক সম্পূর্ণ বিদ্যুতায়নের লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে ।

২০১৭ সালের ডোকলাম সংঘাতের পর শিলিগুড়ি করিডরের কৌশলগত গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই করিডরের উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে ভারত বিকল্প রেলপথ ও অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের সংযোগ শক্তিশালী করছে ।

এই উদ্যোগগুলি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের সংযোগ উন্নত করতে এবং কৌশলগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

 

ট্যাগ

বাংলাদেশের উপর নির্ভরতা কমাতে রেলপথে নতুন জোট গড়ছে ভারত

প্রকাশিত হয়েছে: ০৭:১৬:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের সংযোগে একমাত্র স্থলপথ হলো ২২ কিলোমিটার প্রশস্ত শিলিগুড়ি করিডর, যা “চিকেনস নেক” নামে পরিচিত। এই করিডরের উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কৌশলগতভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ভারত সরকার বিকল্প রেলপথ স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

🇮🇳 ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য নতুন রেলপথ পরিকল্পনা

১. বাংলাদেশ হয়ে বিকল্প রেলপথ

ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য চুক্তি ১৯৮০-এর আওতায় ১৪টি নতুন রেলপথের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যার মোট দৈর্ঘ্য ৮৬১ কিলোমিটার। এতে গেজ পরিবর্তন ও নতুন ট্র্যাক নির্মাণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের বিকল্প সংযোগ স্থাপন করবে ।

২. নেপাল ও ভুটানের মাধ্যমে সংযোগ

বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কারণে ভারত নেপাল ও ভুটানের মাধ্যমে বিকল্প রেলপথ স্থাপনের পরিকল্পনা করছে। এই উদ্যোগে উত্তর প্রদেশ ও বিহারে রেললাইন দ্বিগুণ বা চারগুণ করার জন্য জরিপ কাজ চলছে ।

৩. সিভোক-রাংপো রেললাইন

পশ্চিমবঙ্গের সিভোক থেকে সিকিমের রাংপো পর্যন্ত ৪৪.৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেললাইন নির্মাণাধীন। এটি ভবিষ্যতে গ্যাংটক ও নাথুলা পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে, যা কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ।

৪. পাটনা-গুয়াহাটি হাই-স্পিড রেল করিডর

৮৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই হাই-স্পিড রেল লাইন পাটনা থেকে গুয়াহাটি পর্যন্ত চলবে, যা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের দ্রুত সংযোগ স্থাপন করবে ।

⚡ বিদ্যুতায়িত রেল পরিষেবা

উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে (NFR) আগরতলা (ত্রিপুরা) থেকে অরুণাচল স্টেশন (আসাম) পর্যন্ত বিদ্যুতায়িত যাত্রীবাহী ট্রেনের পরীক্ষামূলক চালনা শুরু করেছে। এই উদ্যোগটি ২০২২ সালে শুরু হওয়া ৪৬ কোটি টাকার বিদ্যুতায়ন প্রকল্পের অংশ, যা ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতের রেল নেটওয়ার্ক সম্পূর্ণ বিদ্যুতায়নের লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে ।

২০১৭ সালের ডোকলাম সংঘাতের পর শিলিগুড়ি করিডরের কৌশলগত গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই করিডরের উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে ভারত বিকল্প রেলপথ ও অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের সংযোগ শক্তিশালী করছে ।

এই উদ্যোগগুলি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের সংযোগ উন্নত করতে এবং কৌশলগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।