বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করছেন না বলে স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন তাঁর উপদেষ্টারা। গতকাল (২৩ মে) রাজধানীতে অনুষ্ঠিত এক জরুরি বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে তারা এই ঘোষণা দেন।
সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ড. ইউনূসের পদত্যাগ নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়েছিল। এমন পরিস্থিতিতে উপদেষ্টাদের এই সুস্পষ্ট বক্তব্য জাতীয় রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
উপদেষ্টা পরিষদের মুখপাত্র জানান,
“ড. ইউনূস পুরোপুরি সুস্থ ও সচল আছেন। তিনি কোনোরূপ পদত্যাগের চিন্তা করছেন না। বরং তিনি দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের জন্য নির্ধারিত সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বদ্ধপরিকর।”
উল্লেখ্য, দেশের ভেতরে ও বাইরে থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপর চাপ ক্রমেই বাড়ছে। বিশেষত, আগামী নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান, নাগরিক সমাজের উদ্বেগ এবং আন্তর্জাতিক মহলের পর্যবেক্ষণ – এসবের মধ্যে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে সরকার কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল।
বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক সূত্র জানায়, আলোচনা হয়েছে রাজনৈতিক সমঝোতা, নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন ও নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সূচি নিয়ে। ইউনূস স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, তিনি দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার পক্ষে নন, বরং একটি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করাই তাঁর মূল লক্ষ্য।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস ২০২৪ সালের শেষ দিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর নেতৃত্বে একটি "টেকনোক্র্যাট প্রশাসন" গঠিত হয়, যার প্রধান লক্ষ্য হলো রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা।
তবে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে কিছু সংস্কার বিলম্বিত হওয়া, দলগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাব, এবং ইউনূসের কিছু মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায় তাঁর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।
এই ঘোষণার মাধ্যমে অন্তত আপাতত ড. ইউনূসের পদত্যাগ নিয়ে গুজবের অবসান ঘটল। তবে রাজনৈতিক বাস্তবতা ও জনগণের প্রত্যাশা—এই দুয়ের ভারসাম্য রক্ষা করে তিনি কতটা অগ্রসর হতে পারবেন, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
প্রকাশক ও সম্পাদক
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।