০৬:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কেমন করে হাসতেন এবং কাঁদতেন?

রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর চেহারায় সর্বদা একটি প্রশান্ত ও প্রফুল্ল ভাব বিরাজ করত। তিনি ছিলেন মৃদু হাস্যজ্যোতিষ্মান। কখনোই উচ্চস্বরে অট্টহাসি দিতেন না, বরং বিনয়ের সঙ্গে ঠোঁট পর্যন্ত সীমাবদ্ধ মৃদু হাসি দিতেন।

তিনি কখনো গোমড়া মুখ করতেন না, মানুষের সঙ্গে সদা হাসিমুখে মিলেমিশে থাকতেন। তবে যখন কোন দুশ্চিন্তায় পড়তেন, তখন তার প্রভাব তাঁর মুখাবয়বে দেখা যেত এবং সেই মুহূর্তে তিনি অধিক পরিমাণে ছালাতে রত হতেন — আল্লাহর সামনে নিজের দুশ্চিন্তা প্রকাশ করতেন।

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মাঝে মাঝে হালকা-পাতলা রসিকতা করতেন, যা ছিল সদুপদেশপূর্ণ এবং সৌজন্যময়। তিনি কখনো কাউকে কষ্ট দেয়ার জন্য রসিকতা করতেন না। তার প্রতিটি মজার কথা ছিল সত্যভিত্তিক এবং শিক্ষণীয়।

একটি হৃদয়গ্রাহী রসিকতার ঘটনা

একদিন হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর ঘরে তার এক বৃদ্ধা খালা এলেন এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে বললেন:

হে আল্লাহর রাসূল! আমার জন্য দো করুন যেন আল্লাহ আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করান।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) জবাবে বললেন:

হে অমুকের মা! কোন বৃদ্ধা জান্নাতে প্রবেশ করবে না।

এ কথা শুনে তিনি কাঁদতে শুরু করলেন। তখন আয়েশা (রাঃ) অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “তারা তো কিছু বলেনি!” তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হাস্যোজ্জ্বল মুখে ব্যাখ্যা করলেন:

তুমি কি কুরআনে পড়োনি?”

إِنَّا أَنْشَأْنَاهُنَّ إِنْشَاءً – فَجَعَلْنَاهُنَّ أَبْكَارًا – عُرُبًا أَتْرَابًا – لِأَصْحَابِ الْيَمِينِ

আমরা জান্নাতী নারীদের বিশেষ রূপে সৃষ্টি করব, অতঃপর তাদের চিরকুমারী করব, সোহাগিনী সমবয়স্কা করবডানদিকের (সৎকর্মশীল) লোকদের জন্য। (সূরা আল-ওয়াক্বি‘আহ ৫৬:৩৫–৩৮)

অর্থাৎ, জান্নাতে কেউ বৃদ্ধাবস্থায় প্রবেশ করবে না; আল্লাহ সবাইকে যৌবনের শ্রেষ্ঠত্বে ফিরিয়ে দেবেন।

 “জান্নাতবাসী নারীপুরুষ সকলেই ৩০ থেকে ৩৩ বছর বয়সী হবেন।
(তিরমিযী, হাদীস: সহীহ)

 

এই রসিকতা, যার মধ্যে রয়েছে একটি হালকা ব্যঙ্গ আর কুরআনের দার্শনিক ব্যাখ্যা—প্রমাণ করে রাসূল (সাঃ) কতটা হৃদয়বান, প্রজ্ঞাবান ও কোমলস্বভাব ছিলেন। তাঁর হাসি কখনো অবহেলার প্রকাশ ছিল না, বরং ছিল দয়া, শিক্ষাদান এবং মানবিকতার এক মহৎ রূপ।

 

 

ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কেমন করে হাসতেন এবং কাঁদতেন?

প্রকাশিত হয়েছে: ০৭:৩৬:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর চেহারায় সর্বদা একটি প্রশান্ত ও প্রফুল্ল ভাব বিরাজ করত। তিনি ছিলেন মৃদু হাস্যজ্যোতিষ্মান। কখনোই উচ্চস্বরে অট্টহাসি দিতেন না, বরং বিনয়ের সঙ্গে ঠোঁট পর্যন্ত সীমাবদ্ধ মৃদু হাসি দিতেন।

তিনি কখনো গোমড়া মুখ করতেন না, মানুষের সঙ্গে সদা হাসিমুখে মিলেমিশে থাকতেন। তবে যখন কোন দুশ্চিন্তায় পড়তেন, তখন তার প্রভাব তাঁর মুখাবয়বে দেখা যেত এবং সেই মুহূর্তে তিনি অধিক পরিমাণে ছালাতে রত হতেন — আল্লাহর সামনে নিজের দুশ্চিন্তা প্রকাশ করতেন।

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মাঝে মাঝে হালকা-পাতলা রসিকতা করতেন, যা ছিল সদুপদেশপূর্ণ এবং সৌজন্যময়। তিনি কখনো কাউকে কষ্ট দেয়ার জন্য রসিকতা করতেন না। তার প্রতিটি মজার কথা ছিল সত্যভিত্তিক এবং শিক্ষণীয়।

একটি হৃদয়গ্রাহী রসিকতার ঘটনা

একদিন হযরত আয়েশা (রাঃ)-এর ঘরে তার এক বৃদ্ধা খালা এলেন এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে বললেন:

হে আল্লাহর রাসূল! আমার জন্য দো করুন যেন আল্লাহ আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করান।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) জবাবে বললেন:

হে অমুকের মা! কোন বৃদ্ধা জান্নাতে প্রবেশ করবে না।

এ কথা শুনে তিনি কাঁদতে শুরু করলেন। তখন আয়েশা (রাঃ) অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “তারা তো কিছু বলেনি!” তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হাস্যোজ্জ্বল মুখে ব্যাখ্যা করলেন:

তুমি কি কুরআনে পড়োনি?”

إِنَّا أَنْشَأْنَاهُنَّ إِنْشَاءً – فَجَعَلْنَاهُنَّ أَبْكَارًا – عُرُبًا أَتْرَابًا – لِأَصْحَابِ الْيَمِينِ

আমরা জান্নাতী নারীদের বিশেষ রূপে সৃষ্টি করব, অতঃপর তাদের চিরকুমারী করব, সোহাগিনী সমবয়স্কা করবডানদিকের (সৎকর্মশীল) লোকদের জন্য। (সূরা আল-ওয়াক্বি‘আহ ৫৬:৩৫–৩৮)

অর্থাৎ, জান্নাতে কেউ বৃদ্ধাবস্থায় প্রবেশ করবে না; আল্লাহ সবাইকে যৌবনের শ্রেষ্ঠত্বে ফিরিয়ে দেবেন।

 “জান্নাতবাসী নারীপুরুষ সকলেই ৩০ থেকে ৩৩ বছর বয়সী হবেন।
(তিরমিযী, হাদীস: সহীহ)

 

এই রসিকতা, যার মধ্যে রয়েছে একটি হালকা ব্যঙ্গ আর কুরআনের দার্শনিক ব্যাখ্যা—প্রমাণ করে রাসূল (সাঃ) কতটা হৃদয়বান, প্রজ্ঞাবান ও কোমলস্বভাব ছিলেন। তাঁর হাসি কখনো অবহেলার প্রকাশ ছিল না, বরং ছিল দয়া, শিক্ষাদান এবং মানবিকতার এক মহৎ রূপ।