চলতি বছর ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বৃষ্টিপাত বা মনসুন এসেছে নির্ধারিত সময়ের ১৭ দিন আগেই — ভেঙে দিয়েছে অতীতের সব রেকর্ড। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) নিশ্চিত করেছে, ২৬শে মে মুম্বাইতে মৌসুমি বৃষ্টি প্রবেশ করেছে, যেখানে সাধারণত এটি ঢোকে ১১ জুনের দিকে।
কেরালায় ২৪ মে মনসুনের প্রবেশের পর মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে তা মুম্বাই পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। এত দ্রুত অগ্রগতি আগে কখনো দেখা যায়নি। এর ফলে ইতিমধ্যেই মুম্বাই, কেরালা, কর্নাটক ও মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
আবহাওয়া বিভাগের পক্ষ থেকে কেরালার ১৪টি জেলা ও মুম্বাইয়ে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে রাস্তাঘাট ডুবে গেছে, ট্রেন ও বিমান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে, মানুষ অফিস যেতে বাধ্য হচ্ছে সাইকেল ঠেলে বা হাঁটতে হাঁটতে।
ভারতের স্বাধীনতার পর থেকে (১৯৫০ সাল থেকে) আবহাওয়া দপ্তর যে মনসুনের রেকর্ড রাখছে, তার ইতিহাসে এত আগে কখনো মুম্বাইতে মৌসুমি বৃষ্টি আসেনি। পূর্ববর্তী দ্রুততম আগমন ছিল ২৯ মে – সেটিও ঘটেছিল মাত্র তিনবার: ১৯৫৬, ১৯৬১ ও ১৯৭১ সালে।
আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন, এবারের দ্রুত মনসুন প্রবেশের পেছনে রয়েছে একাধিক কারণ:
ম্যাডেন-জুলিয়ান অসিলেশন (MJO): এটি একটি বাতাস, বায়ুচাপ ও মেঘঘনঘটার চলমান চক্র, যা এ বছর ভারত মহাসাগরে ছিল অতি সক্রিয়।
ক্রস ইক্যুয়েটোরিয়াল উইন্ড: যা দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে জলীয় বাষ্প নিয়ে এসেছে ভারতে।
আরব সাগরের নিম্নচাপ: সম্প্রতি সৃষ্টি হওয়া একটি সাইক্লোনিক সার্কুলেশন মনসুনের গতি বাড়িয়েছে।
ভারতের পশ্চিম উপকূলে মনসুন আগমনের ফলে বাংলাদেশেও আগাম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়াবিদরা ধারণা করছেন। তবে তা কবে এবং কতটা হবে, এখনই নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।
আইএমডি’র পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মনসুন হবে ‘স্বাভাবিকের চেয়েও বেশি’, অর্থাৎ দীর্ঘমেয়াদী গড় বৃষ্টিপাতের ১০৫ শতাংশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে আগামী কয়েক মাস ভারতে টানা বৃষ্টি এবং আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
প্রকাশক ও সম্পাদক
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।