
ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) একদিনে তিনটি ভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে অন্তত ১৭২ জন বাংলাদেশিকে দেশে পুশ-ইন করেছে। শনিবার রাত থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত চলা এই ঘটনায় দেশের সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, এই ১৭২ জনের মধ্যে রয়েছেন ৪৯ জন পুরুষ, ৫৩ জন নারী এবং ৭০ জন শিশু। তারা বেশিরভাগই কুড়িগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা এবং দীর্ঘদিন ধরে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন।
মেহেরপুর (মুজিবনগর): ভোররাতে সোনাপুর-মাঝপাড়া সীমান্ত দিয়ে ১৯ জন বাংলাদেশিকে পুশ-ইন করা হয়। তারা ভারতের হরিয়ানা রাজ্য থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
সিলেট (বিয়ানীবাজার): নয়াগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ৩২ জন বাংলাদেশিকে পাঠানো হয়, যারা গুজরাটের ইটভাটা ও পাথরখনিতে কাজ করতেন।
মৌলভীবাজার (বারলেখা): শাহবাজপুর ও পল্লাতল সীমান্ত দিয়ে সবচেয়ে বেশি—১২১ জন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
বিজিবি জানিয়েছে, বিএসএফ পুশ-ইন কার্যক্রম চালানোর সময় সীমান্তের নিরাপত্তা বাতি বন্ধ রাখে, যাতে বিজিবির নজরদারি বাধাগ্রস্ত হয়। বিষয়টি নিয়ে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে এবং কূটনৈতিক চ্যানেলে বিষয়টি উত্থাপন করার প্রস্তুতি চলছে।
গত ৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত ভারতের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে মোট ৭৪২ জন বাংলাদেশিকে পুশ-ইন করা হয়েছে বলে বিজিবির তথ্য বলছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে অবৈধভাবে বসবাসকারী অভিবাসী শ্রমিক।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এভাবে হঠাৎ করে বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তি এবং দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক চুক্তির পরিপন্থী। বিষয়টি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিস্তারিত নজরদারি ও কূটনৈতিক উদ্যোগ ছাড়া এই প্রবণতা থামবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।