
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ এক গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় সফরে জাপানের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করছেন। এই সফরে তিনি জাপানের শীর্ষস্থানীয় নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবেন, যার মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (EPA), বাজেট সহায়তা, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং নিরাপত্তা ইস্যুগুলো প্রাধান্য পাবে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, অধ্যাপক ইউনূসের এই সফর বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও গভীর ও বিস্তৃত করার লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে। সফরের অন্যতম প্রধান আলোচ্য বিষয় হবে একটি সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (EPA) স্বাক্ষরের সম্ভাবনা ও এর বিভিন্ন দিক। এই চুক্তির মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের সুযোগ বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এছাড়াও, বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পসমূহ এবং সার্বিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য জাপানের পক্ষ থেকে বাজেট সহায়তা প্রাপ্তির বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। জাপান দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্র এবং এই সফরের মাধ্যমে সেই সহযোগিতার ক্ষেত্র আরও প্রসারিত হবে বলে কূটনৈতিক মহল মনে করছে।
অবকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে বৃহৎ প্রকল্প যেমন – বিদ্যুৎ, জ্বালানি, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় জাপানি বিনিয়োগ ও কারিগরি সহায়তা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হবে। ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা মেটানো এবং টেকসই অবকাঠামো নির্মাণে জাপানের অভিজ্ঞতা ও সহযোগিতা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নিরাপত্তা ইস্যুতেও আলোচনা হবে। আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমুদ্রপথে নিরাপত্তা জোরদার করার পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও উভয় পক্ষ মতবিনিময় করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের এই জাপান সফর বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এই সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত অংশীদারিত্ব এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে এবং তা বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। সফর শেষে একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশিত হতে পারে, যেখানে আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ও ভবিষ্যৎ সহযোগিতার রূপরেখা তুলে ধরা হবে।