
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা দিয়েছেন যে, আগামী বছরের জুনের মধ্যেই বাংলাদেশে একটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, সরকারের গৃহীত সংস্কার প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেই এই নির্বাচনের আয়োজন করা হবে।
বুধবার টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং জাপান-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ লিগ (জেবিপিএফএল)-এর সভাপতি তারো আসো সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এই মন্তব্য করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
ড. ইউনূস বলেন,
“অন্তর্বর্তী সরকার তিনটি মূল ক্ষেত্রে কাজ করছে— প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, অতীতের হত্যাকাণ্ডের বিচার ও অবাধ নির্বাচন আয়োজন।”
তিনি উল্লেখ করেন, আগের সরকার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙে দিয়েছে এবং তরুণদের প্রতিবাদে নামতে বাধ্য করেছে। তিনি বলেন,
“তরুণরাই আমাকে আহ্বান করেছে এই বিশৃঙ্খলতা ঠিক করার জন্য।”
অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা জানান, সরকার ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনর্গঠন ও ঋণ পরিশোধে সাফল্য অর্জন করেছে।
বৈঠকে তারো আসোর সঙ্গে থাকা জাপানি আইনপ্রণেতারা বলেন, প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়ক হবে।
প্রধান উপদেষ্টা জানান,
“আগস্টের মধ্যে আলোচনা শেষ করে সেপ্টেম্বরেই চুক্তি স্বাক্ষরের আশা করছি। স্বাক্ষরিত হলে জাপান হবে বাংলাদেশের সঙ্গে ইপিএ স্বাক্ষরকারী প্রথম দেশ।”
সফরের মূল উদ্দেশ্য হিসেবে ড. ইউনূস বলেন,
“গত দশ মাসে জাপান আমাদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দিয়েছে। আমি এই সফরের মাধ্যমে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে এসেছি।”
তিনি তারো আসোকে সরাসরি সংস্কার কর্মসূচি পরিদর্শনে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
রোহিঙ্গা ইস্যুতেও জাপানি আইনপ্রণেতাদের সহযোগিতা কামনা করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন,
“রোহিঙ্গা সংকট অন্যান্য শরণার্থী সংকট থেকে আলাদা। কারণ তারা অন্য দেশে নয়, নিজেদের ঘরে ফিরে যেতে চায়।”
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক (সিনিয়র সচিব) লামিয়া মোরশেদ ।