
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত:
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
“আল্লাহর কাছে সবচেয়ে পছন্দনীয় দিনগুলো হলো জিলহজের প্রথম দশ দিনে করা নেক কাজ।”
লোকেরা বলল, “হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করাও কি এ কাজগুলোর চেয়ে উত্তম না?”
তিনি বললেন, “না, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করাও উত্তম নয়, তবে সেই ব্যক্তি ছাড়া যে নিজের প্রাণ ও সম্পদ নিয়ে জিহাদে বের হয়ে সব কিছু আল্লাহর পথে উৎসর্গ করে (শহীদ হয়)।”
📚 সহিহ বুখারি, হাদিস: ৯৬৯
🌙 কুরআনের দৃষ্টিতে জিলহজের প্রথম দশ দিন
আল্লাহ তাআলা বলেন:
“শপথ প্রত্যুষের ও দশ রজনির।”
📖 সূরা আল-ফাজর, আয়াত: ১-২
মুফাসসিরগণ ব্যাখ্যা করেছেন যে, এখানে “দশ রজনি” বলতে জিলহজ মাসের প্রথম দশ রাতকে বোঝানো হয়েছে। এই ব্যাখ্যা ইবনে আব্বাস (রাঃ), ইবনে যুবাইর (রাঃ), মুজাহিদ (রহঃ) প্রমুখ সাহাবি ও তাবেয়িনদের থেকে বর্ণিত। ইমাম ইবনে কাসির (রহঃ) এই মতটিকে বিশুদ্ধ বলেছেন।
🕋 জিলহজের প্রথম দশ দিনের বিশেষ আমল
এই দশ দিনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা সুন্নত ও মুস্তাহাব:
- সিয়াম পালন (রোজা রাখা): জিলহজের প্রথম নয় দিনে রোজা রাখা সুন্নত। বিশেষ করে ৯ জিলহজ, অর্থাৎ আরাফার দিনে রোজা রাখা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। হাদিসে এসেছে, আরাফার দিনের রোজা পূর্ববর্তী ও পরবর্তী এক বছরের গুনাহ মাফের কারণ হয়।
- জিকির বৃদ্ধি: এই দিনগুলোতে বেশি বেশি তাহলীল (লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ), তাকবির (আল্লাহু আকবার) ও তাহমিদ (আলহামদুলিল্লাহ) পাঠ করা সুন্নত।
- কুরআন তিলাওয়াত ও দোয়া: এই সময়ে কুরআন তিলাওয়াত, দোয়া, ইস্তিগফার ও তওবা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- দান–সদকা: অসহায় ও দরিদ্রদের সাহায্য করা, দান-সদকা করা এই দিনগুলোর ফজিলত বাড়িয়ে দেয়।
- হজ ও কুরবানি: যারা সামর্থ্যবান, তাদের জন্য হজ পালন ও কুরবানি করা এই মাসের বিশেষ আমল।
এই ফজিলতপূর্ণ দিনগুলোতে আমাদের উচিত বেশি বেশি ইবাদত করা, পাপ থেকে বিরত থাকা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করা।