০১:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাজরে আসওয়াদ: জান্নাত থেকে আগত পবিত্র পাথরের রহস্য

মক্কায় কাবা শরিফের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে স্থাপিত একটি কালো পাথর—হাজরে আসওয়াদ—ইসলামী বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে এক অতি মূল্যবান ও পবিত্র বস্তু হিসেবে বিবেচিত। বর্ণনা রয়েছে, এটি জান্নাত থেকে আগত পাথর, যার ওপর চুমু দেওয়া রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নত।

তাওয়াফ শুরুর স্থান হিসেবে হাজরে আসওয়াদের গুরুত্ব অপরিসীম। হজ ও ওমরাহ পালনের সময় প্রতিবার তাওয়াফে এটি স্পর্শ বা চুমু দেওয়া হয়। ভিড়ের কারণে সরাসরি চুমু না দিতে পারলে ইশারা করাও সুন্নতসঙ্গত।

হাদিস ও ইসলামী ইতিহাস অনুযায়ী, হাজরে আসওয়াদ একসময় ছিল দুধের মতো সাদা। তবে মানবজাতির পাপের কারণে এটি কালো হয়ে যায়। অনেকে মনে করেন, এটি গুনাহর স্মারক স্বরূপ।

বর্তমানে হাজরে আসওয়াদ একটি সম্পূর্ণ পাথর নয়। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়েরের শাসনামলে কাবা শরিফে অগ্নিকাণ্ডের ফলে এটি ভেঙে আটটি টুকরোতে পরিণত হয়। পরবর্তীতে সেগুলো রুপার ফ্রেমে সংযুক্ত করে পুনরায় স্থাপন করা হয়। বড় টুকরোটির আকৃতি একটি খেজুরের সমান।

হাজরে আসওয়াদের সামনে প্রায়শই দেখা যায় দীর্ঘ লাইন। বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের মুসল্লিরা চুমু দেওয়া নিয়ে আবেগপ্রবণ থাকেন। তবে ইসলামিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ আমল করতে গিয়ে কাউকে ধাক্কা দেওয়া বা কষ্ট দেওয়া শরিয়তবিরোধী। উদ্দেশ্য হওয়া উচিত আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য ও ভালোবাসা প্রকাশ।

পবিত্র স্থানটি ২৪ ঘণ্টা সৌদি নিরাপত্তা বাহিনীর তত্ত্বাবধানে থাকে। ফরজ নামাজ চলাকালীন হাজরে আসওয়াদে চুমু দেওয়া নিষিদ্ধ থাকলেও নামাজ শেষে অনেকেই সেখানে চুমু দিতে ব্যাকুল হয়ে পড়েন। নারী মুসল্লিদের মাঝেও দেখা যায় একই আগ্রহ।

ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক গুরুত্বে পূর্ণ এই পাথর ইসলামি ঐতিহ্যের এক অমূল্য নিদর্শন হয়ে রয়েছে।

ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

হাজরে আসওয়াদ: জান্নাত থেকে আগত পবিত্র পাথরের রহস্য

প্রকাশিত হয়েছে: ০৫:৫১:২৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫

মক্কায় কাবা শরিফের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে স্থাপিত একটি কালো পাথর—হাজরে আসওয়াদ—ইসলামী বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে এক অতি মূল্যবান ও পবিত্র বস্তু হিসেবে বিবেচিত। বর্ণনা রয়েছে, এটি জান্নাত থেকে আগত পাথর, যার ওপর চুমু দেওয়া রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নত।

তাওয়াফ শুরুর স্থান হিসেবে হাজরে আসওয়াদের গুরুত্ব অপরিসীম। হজ ও ওমরাহ পালনের সময় প্রতিবার তাওয়াফে এটি স্পর্শ বা চুমু দেওয়া হয়। ভিড়ের কারণে সরাসরি চুমু না দিতে পারলে ইশারা করাও সুন্নতসঙ্গত।

হাদিস ও ইসলামী ইতিহাস অনুযায়ী, হাজরে আসওয়াদ একসময় ছিল দুধের মতো সাদা। তবে মানবজাতির পাপের কারণে এটি কালো হয়ে যায়। অনেকে মনে করেন, এটি গুনাহর স্মারক স্বরূপ।

বর্তমানে হাজরে আসওয়াদ একটি সম্পূর্ণ পাথর নয়। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়েরের শাসনামলে কাবা শরিফে অগ্নিকাণ্ডের ফলে এটি ভেঙে আটটি টুকরোতে পরিণত হয়। পরবর্তীতে সেগুলো রুপার ফ্রেমে সংযুক্ত করে পুনরায় স্থাপন করা হয়। বড় টুকরোটির আকৃতি একটি খেজুরের সমান।

হাজরে আসওয়াদের সামনে প্রায়শই দেখা যায় দীর্ঘ লাইন। বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের মুসল্লিরা চুমু দেওয়া নিয়ে আবেগপ্রবণ থাকেন। তবে ইসলামিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ আমল করতে গিয়ে কাউকে ধাক্কা দেওয়া বা কষ্ট দেওয়া শরিয়তবিরোধী। উদ্দেশ্য হওয়া উচিত আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য ও ভালোবাসা প্রকাশ।

পবিত্র স্থানটি ২৪ ঘণ্টা সৌদি নিরাপত্তা বাহিনীর তত্ত্বাবধানে থাকে। ফরজ নামাজ চলাকালীন হাজরে আসওয়াদে চুমু দেওয়া নিষিদ্ধ থাকলেও নামাজ শেষে অনেকেই সেখানে চুমু দিতে ব্যাকুল হয়ে পড়েন। নারী মুসল্লিদের মাঝেও দেখা যায় একই আগ্রহ।

ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক গুরুত্বে পূর্ণ এই পাথর ইসলামি ঐতিহ্যের এক অমূল্য নিদর্শন হয়ে রয়েছে।