২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়ের সীমা অপরিবর্তিত থাকায় অনেকের প্রত্যাশা ভেঙেছে। আগের মতোই বার্ষিক ৩.৫ লাখ টাকা আয় পর্যন্ত করমুক্ত রাখা হয়েছে। যদিও ভবিষ্যতের জন্য সীমা বাড়ানোর আভাস দেওয়া হয়েছে, চলতি বছর সরাসরি করছাড়ের কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না সাধারণ করদাতারা।
অন্যদিকে, করহার কাঠামোর পরিবর্তনের ফলে অধিকাংশ করদাতার ওপর করের প্রকৃত চাপ বেড়েছে। অর্থ উপদেষ্টা সাত ধাপের পরিবর্তে ছয় ধাপের নতুন করহারের প্রস্তাব দিয়েছেন, যার ফলে আগের বছরের সমান আয় করেও এবার তুলনামূলকভাবে বেশি কর দিতে হবে।
করমুক্ত সীমা ও বিশেষ শ্রেণির করছাড়
করদাতার ধরন | করমুক্ত আয়সীমা (২০২৫-২৬) |
সাধারণ ব্যক্তি | ৩,৫০,০০০ টাকা |
নারী ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সী | ৪,০০,০০০ টাকা |
তৃতীয় লিঙ্গ | ৪,৭৫,০০০ টাকা |
গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা | ৫,০০,০০০ টাকা |
‘জুলাই যোদ্ধা’ (২০২৪ গণঅভ্যুত্থান) | ৫,২৫,০০০ টাকা |
করহার পরিবর্তনের ফল কী?
তুলনামূলক করদায়িত্ব (উদাহরণ):
আয় (টাকা) | আগের কর (২০২৪-২৫) | নতুন কর (২০২৫-২৬) | পার্থক্য |
৮,৫০,০০০ | ১৭,৫০০ | ~২২,৫০০ | +৫,০০০ |
১৫,০০,০০০ | ১,৩৫,০০০ | ~১,৫০,০০০ | +১৫,০০০ |
করমুক্ত সুবিধা যেসব খাতে:
অর্থনীতিবিদ ড. সেলিম রায়হান বলেন:
“সরকার করের আওতা বাড়াতে পারেনি, বরং একই সংখ্যক করদাতার ওপর চাপ আরও বাড়িয়েছে। করসংস্কারের সুযোগ ছিল, কিন্তু পুরোনো কাঠামোই অনুসরণ করা হয়েছে।”
মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব
বাজেটে কর ও শুল্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে কিছু নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবও রাখা হয়েছে। এর ফলে সাধারণ মানুষকে একইসাথে মূল্যস্ফীতি ও করবৃদ্ধি—দু’দিকের চাপে পড়তে হতে পারে।
যেখানে জনগণের প্রত্যাশা ছিল করমুক্ত সীমা বাড়ানো হবে এবং কর কাঠামোতে স্বস্তি আসবে, সেখানে বাজেট বাস্তবতায় করদাতাদের জন্য চাপ আরও বাড়লো। আয় না বাড়লেও কর বাড়ছে—এটাই এখন অধিকাংশ মধ্যবিত্ত শ্রেণির মূল উদ্বেগ। বাজেটটি রাজনৈতিকভাবে অন্তর্বর্তী হলেও, এর চাপ কিন্তু সম্পূর্ণ বাস্তব।
প্রকাশক ও সম্পাদক
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।