
নিবন্ধনের পাশাপাশি দলীয় প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা‘ ফেরত দিচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে—এমন নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে প্রতীকটি পুনরায় ইসির প্রতীক তফসিলে যুক্ত করতে কিছু দাপ্তরিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
বুধবার (৪ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত কমিশন সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান।
সানাউল্লাহ বলেন, “বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ে ২০১৩ সালের হাইকোর্টের রায়কে মহামান্য আপিল বিভাগ ১ জুন পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী আমরা কমিশনে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি—তাদের নিবন্ধন পুনরায় কার্যকর হবে।”
তিনি আরও জানান, “জামায়াত দলীয়ভাবে আমাদের কাছে একটি আবেদন করেছে যাতে তাদের পুরনো দলীয় প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ও ফেরত দেওয়া হয়। আমরা সেটিও বিবেচনায় নিয়েছি এবং নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছি।”
ইসি কমিশনার বলেন, “দাঁড়িপাল্লা প্রতীকটি ফেরত দেওয়ার জন্য আমাদের প্রতীকের তফসিলে তা আবার যুক্ত করতে হবে। এ প্রক্রিয়ায় কিছু সময় লাগবে। এছাড়া, প্রতীকের সংখ্যা বর্তমানে ৬৯, আমরা সেটি বাড়িয়ে ১০০ করতে যাচ্ছি—এটাও একটি কারণ।”
তিনি বলেন, “২০১৬ সালে আদালতের ফুল কোর্ট সভার এক প্রশাসনিক আদেশে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকটি বাতিল করা হয়েছিল, যা রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে ইসিতে এসেছিল। তবে জামায়াতের আবেদনের সঙ্গে যুক্ত রিট পিটিশন নম্বর ৩৭৯৭/২০০৬–এ স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, দাঁড়িপাল্লা আদালতের প্রতীক হলেও তা নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে ব্যবহারে আদালতের সম্মান ক্ষুণ্ন হয় না। ওই রিট আপিল বিভাগ খারিজ করেছে এবং সেই রায় এখনও বলবৎ আছে।”
সানাউল্লাহ বলেন, “গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (RPO) ৯০ ও চ–১ক ধারা অনুযায়ী, কোনো দলকে একবার কোনো প্রতীক বরাদ্দ দিলে সেটি সংরক্ষণ করতে হবে। ২০০৮ সালের ৫ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধনের সঙ্গে তাদের প্রতীকও নির্ধারিত হয়েছিল। সেই ভিত্তিতেই আমরা কাজ করছি।”
নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরিয়ে পাওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের পথ ফের খুলছে। তবে পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে কিছু দাপ্তরিক সময় লাগবে বলে ইসি জানিয়েছে।