সলামের ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও ভাবগম্ভীর দিন হচ্ছে আরাফাতের দিন, যা প্রতি বছর ৯ জিলহজ অনুষ্ঠিত হয়। এ দিন হজের অন্যতম মূল স্তম্ভ এবং মুমিনদের জন্য আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের এক বিশেষ উপলক্ষ।
আরাফাতের দিন এমন এক পবিত্র দিন, যেদিন আসমান যেন আরও কাছে নেমে আসে। বাতাস ভরে ওঠে অনুশোচনা, কান্না আর প্রার্থনায়। লাখো হজযাত্রী সৌদি আরবের পবিত্র আরাফাতের ময়দানে জমায়েত হন, দাঁড়িয়ে থাকেন সূর্যাস্ত পর্যন্ত, আর হৃদয় খুলে আহ্বান জানান প্রভুর কাছে। এদিন যারা হজে না থাকেন, তারাও পালন করেন রোজা ও ইবাদতে বিশেষ গুরুত্ব।
পবিত্র আরাফাতের ময়দানে দাঁড়িয়ে মহানবী মুহাম্মদ (সা.) ঘোষণা করেন কুরআনের সেই ঐতিহাসিক আয়াত:
“আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম, তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম।”
📖 (সূরা আল-মায়েদা: ৩)
এই আয়াত ইসলামের পূর্ণতা ও মানবজাতির জন্য এক পরিপূর্ণ দিকনির্দেশনার নিদর্শন হিসেবে বিবেচিত হয়।
আরাফাতের দিন বান্দার জন্য সবচেয়ে কাছাকাছি আসার মুহূর্ত। রাসুল (সা.) বলেছেন:
“আরাফার দিনের চেয়ে বেশি আল্লাহ কোনো দিন বান্দাদের জাহান্নাম থেকে মুক্ত করেন না। তিনি বান্দাদেরকে নিকটবর্তী করেন এবং ফেরেশতাদের সামনে তাঁদের নিয়ে গর্ব করেন।”
📚 (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৩৪৮)
যাঁরা হজে অংশগ্রহণ করছেন না, তাঁদের জন্য এ দিনের রোজা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“আশা করি, আল্লাহ আরাফার দিনের রোজার বিনিময়ে পূর্ববর্তী এক বছর এবং পরবর্তী এক বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন।”
📚 (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১১৬২)
আরাফার দিনের দোয়া সর্বোত্তম দোয়া হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন মহানবী (সা.):
“সবচেয়ে উত্তম দোয়া হলো আরাফার দিনের দোয়া।”
📚 (তিরমিজি, হাদিস: ৩৫৮৫)
এই দিনটি এমন এক মুহূর্ত, যখন আসমান উন্মুক্ত থাকে বান্দার আহাজারির জন্য। এক ফোঁটা চোখের পানি, একটি অনুতপ্ত মিনতি—প্রভুর করুণার দরজাগুলো খুলে দেয়।
প্রকাশক ও সম্পাদক
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।