বাস নেই, ভাড়া বেশি, অপেক্ষা দীর্ঘ—বাড়ি ফেরা যেন কষ্টসাধ্য এক যাত্রা
পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে রাজধানী ঢাকার গাবতলী ও কল্যাণপুর বাস টার্মিনাল পরিণত হয়েছে জনসমুদ্রে। ভোর থেকে শুরু হওয়া যাত্রীদের ঢল দুপুর গড়াতেই ভয়াবহ ভিড়ে রূপ নেয়। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও একটানা বৃষ্টিপাত উপেক্ষা করে হাজারো মানুষ পরিবার-পরিজনসহ ছুটছেন গ্রামের পথে, প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে।
❝ "বাসের টিকিট আগেই কেটেছিলাম, কিন্তু এখনো কোনো খবর নেই। বাচ্চা কোলে নিয়ে ঘণ্টাখানেক ধরে দাঁড়িয়ে আছি।" ❞
যাত্রী (গাবতলী টার্মিনাল)
অনেক যাত্রী জানিয়েছেন, অগ্রিম টিকিট কাটা সত্ত্বেও নির্ধারিত সময়ে বাস না আসায় তাঁদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বেশিরভাগ বাস শিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। ফলে নারী, শিশু ও প্রবীণ যাত্রীরা পড়ছেন চরম দুর্ভোগে। কেউ কেউ বৃষ্টিতে ভিজে, আবার কেউ প্লাস্টিক বা ছাতা মাথায় দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন গন্তব্যে ফেরার অপেক্ষায়।
ভাড়া নিয়েও উঠেছে বিস্তর অভিযোগ। যাত্রীরা বলছেন, নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে দ্বিগুণ দাম আদায় করা হচ্ছে অনেক রুটে। বিশেষ করে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলমুখী যাত্রীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। অনেক পরিবহন কাউন্টার খোলা থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ে বাস না পাওয়ায় বিভ্রান্তি ও ভোগান্তি বেড়েছে বহুগুণ।
ভোগান্তি লাঘবে টার্মিনালে মোতায়েন রয়েছে ট্রাফিক পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বেশ কয়েকটি পরিবহনের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও শিডিউল ভঙ্গের অভিযোগে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। যাত্রীদের অভিযোগ গ্রহণে খোলা হয়েছে অস্থায়ী অভিযোগ কেন্দ্রও।
ঈদ মানেই পরিবারে ফেরার আনন্দ। তবে যাতায়াত ব্যবস্থা অনিয়মিত ও ভাড়া নৈরাজ্যের কারণে সেই আনন্দের পথ যেন হয়ে উঠেছে দীর্ঘ, ক্লান্তিকর ও ব্যয়বহুল। প্রশাসনের তৎপরতা সত্ত্বেও যাত্রীদের দুর্ভোগ কমছে না—যা আমাদের পরিবহন ব্যবস্থার দুর্বলতার করুণ চিত্র ফুটিয়ে তোলে।
প্রকাশক ও সম্পাদক
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।