পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে দেশের মসলার বাজারে ব্যাপক অস্থিরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এলাচ, লবঙ্গ, দারুচিনি, জিরা, আদা থেকে শুরু করে কালোজিরা পর্যন্ত প্রায় সব ধরনের মসলার দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এতে মধ্যবিত্তসহ সাধারণ ক্রেতারা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।
সারাদেশের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক মাসের ব্যবধানে বেশিরভাগ মসলার দাম কেজিতে ২০% থেকে ৭০% পর্যন্ত বেড়ে গেছে।
মসলা | বর্তমান দাম (প্রতি কেজি) | পূর্বের দাম (প্রতি কেজি) | বৃদ্ধি |
এলাচ (ছোট) | ৬,০০০ টাকা | ৩,৮০০ টাকা | ↑ ২,২০০ টাকা |
এলাচ (বড়) | ৩,৪০০ টাকা | ২,৪০০ টাকা | ↑ ১,০০০ টাকা |
লবঙ্গ | ১,৭০০–২,০০০ টাকা | ১,২০০–১,৪০০ টাকা | ↑ ৫০০–৬০০ টাকা |
দারুচিনি | ৫৫০–৬৫০ টাকা | ৪৫০ টাকা | ↑ ১০০–২০০ টাকা |
জিরা | ৭০০–৮৮০ টাকা | ৫৫০–৬৫০ টাকা | ↑ ১৫০–২০০ টাকা |
তেজপাতা | ২০০–৩০০ টাকা | ১২০–১৫০ টাকা | ↑ ৮০–১৫০ টাকা |
আদা (আমদানি) | ৩৫০–৪০০ টাকা | ২২০–২৫০ টাকা | ↑ ১৩০–১৫০ টাকা |
কালোজিরা | ৪৫০–৫০০ টাকা | ৩০০–৩৫০ টাকা | ↑ ১৫০ টাকা |
একজন পাইকারি বিক্রেতা জানান, “এবারের ঈদে মসলার চাহিদা প্রচুর, কিন্তু সরবরাহ কম। ফলে দাম বেড়ে গেছে।”
ঢাকার মোহাম্মদপুরের একজন খুচরা বিক্রেতা বলেন, “ক্রেতারা বড্ড অসন্তুষ্ট, অনেকেই আগের মতো পরিমাণ নিচ্ছেন না। আমাদের বিক্রিও কমে গেছে।”
বাংলাদেশ মসলা ব্যবসায়ী সমিতির এক প্রতিনিধি জানান, “বৈশ্বিক বাজারে মসলার বুকিং রেট বৃদ্ধি, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়া, এবং পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধির ফলে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।”
ঈদকে ঘিরে রান্নার অন্যতম উপাদান হচ্ছে মসলা। কিন্তু বর্তমান দামে মসলা কেনা অনেকের জন্য অসম্ভব হয়ে পড়েছে। গৃহিণী রাশিদা বেগম জানান, “দুই কেজি মসলা কিনতেই তিন হাজার টাকার উপরে চলে গেছে। বাকি বাজার করবো কীভাবে বুঝতে পারছি না।”
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, দেশে মজুদদারির প্রবণতা, সীমান্তে চোরাচালান রোধে দুর্বলতা এবং আমদানির ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীলতাই মুল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারণ। সরকারের উচিত এখনই কঠোর বাজার মনিটরিং ও ট্রেড লাইসেন্সধারী সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।
ঈদ উপলক্ষে ভোক্তাদের প্রতি পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, চাহিদা অনুযায়ী কেনাকাটা করার পাশাপাশি প্রয়োজন হলে বিকল্প মসলা ব্যবহারে বিবেচনা করতে। অন্যদিকে, সরকারের উচিত বাজারে তদারকি জোরদার করা এবং ন্যায্যমূল্যে মসলা বিক্রির ব্যবস্থা নেওয়া, যাতে সাধারণ মানুষ স্বস্তিতে ঈদ উদযাপন করতে পারে।
প্রকাশক ও সম্পাদক
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।