মুসলিমদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহার দিনেও থামেনি গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা। শুক্রবার চাঁদ দেখা অনুযায়ী মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশে ঈদ উদ্যাপিত হলেও ফিলিস্তিনের গাজায় দিনটি কেটেছে বোমা হামলা, ধ্বংসস্তূপ এবং কান্নায়।
গাজার ‘সিভিল ডিফেন্স’ বিভাগের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, সকাল থেকে ইসরায়েলি বাহিনী একাধিক স্থানে হামলা চালায়। এতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৮ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে কেবল উত্তর গাজার জাবালিয়ায় এক হামলায় প্রাণ হারান ১১ জন।
এদিকে হাসপাতাল সূত্রের বরাতে আল-জাজিরা জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল থেকে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ জনে। খান ইউনিসের নাসের হাসপাতাল সূত্র জানায়, রাফাহ শহরের পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি গোলাবর্ষণে ৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন।
সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের নামে পরিচালিত এই আক্রমণে বারবার লক্ষ্যবস্তু হচ্ছে গাজার বেসামরিক নাগরিক ও মানবিক ত্রাণকেন্দ্র। এ প্রেক্ষিতে বিতর্কিত ‘গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)’ শুক্রবার সব ধরনের ত্রাণ কার্যক্রম স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে।
গাজার সরকারি গণমাধ্যম অফিস জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এই ফাউন্ডেশনের বিতরণকেন্দ্রগুলোর কাছাকাছি ত্রাণ নিতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে মোট ১১০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ঈদুল আজহার দিনও গাজার সাধারণ মানুষ কাটিয়েছে ভয়, শোক ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্য দিয়ে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া হৃদয়বিদারক দৃশ্যে দেখা যায়—শিশুদের কবরে গিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছেন তাদের মায়েরা, খালি হাতে দাঁড়িয়ে প্রার্থনায় রত মানুষ।
মানবিক সহানুভূতির এই সময়ে, যখন মুসলিম বিশ্ব ঈদের আনন্দে মেতে উঠেছে, গাজার মানুষ সংগ্রাম করছে বেঁচে থাকার জন্য—এক মুষ্টি খাদ্য, নিরাপদ আশ্রয় আর একটু শান্তির আশায়।
প্রকাশক ও সম্পাদক
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।