
দিনাজপুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ঐতিহাসিক গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়েছে দেশের বৃহত্তম ঈদুল আজহার জামাত। শনিবার (৭ জুন) সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু হওয়া এই জামাতে প্রায় এক লাখ মুসল্লি অংশ নেন।
ঈদের নামাজে অংশ নিতে ভোর থেকেই জড়ো হতে থাকেন মুসল্লিরা। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষ নতুন পোশাকে জমায়েত হন মাঠে। দিনাজপুর ছাড়াও আশপাশের জেলা ও উপজেলা থেকেও আসে বিপুলসংখ্যক ধর্মপ্রাণ মুসল্লি। ঈদ উপলক্ষে গোটা এলাকা সাজানো হয় উৎসবমুখর পরিবেশে, ছিল কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থাও।
জামাতে ইমামতি করেন আন-নুজুম ইসলামিক একাডেমির পরিচালক মাওলানা মাহফুজুর রহমান। তিলাওয়াত ও খুতবার পর বিশ্ব মুসলিম, দেশ ও জাতির শান্তি ও কল্যাণ কামনায় মোনাজাত করেন তিনি। অনেক মুসল্লিকে এ সময় আবেগে কাঁদতে দেখা যায়।
নামাজে অংশ নেন জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মারুফাত হোসাইন, পৌরসভার প্রশাসক রিয়াজ উদ্দিনসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও রাজনৈতিক দলের নেতারা।
ঢাকা থেকে আগত মুসল্লি রাব্বি হোসেন বলেন, “এশিয়ার সবচেয়ে বড় ঈদ জামাতে অংশ নিতে বহুদিন ধরেই ইচ্ছা ছিল। আজ আল্লাহ তা পূরণ করেছেন।”
পীরগঞ্জ থেকে আসা সাব্বির ইসলাম বলেন, “আমি ও আমার বন্ধুরা মিলে প্রতিবছরের মতো এবারও একসাথে নামাজ পড়তে এসেছি। অসাধারণ এক অনুভূতি।”
ইমাম মাহফুজুর রহমান বলেন, “দেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহে শান্তিপূর্ণভাবে নামাজ আদায় করতে পেরে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি। বিশেষভাবে আমরা ফিলিস্তিনের মুসলিমদের জন্য দোয়া করেছি।”
জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নজরদারিতে শান্তিপূর্ণভাবে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।”
গোর-এ-শহীদ ঈদগাহ মাঠটির আয়তন প্রায় ২২ একর। ১৯৪৭ সাল থেকে এখানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ২০১৭ সালে নির্মিত হয় ৫২ গম্বুজ বিশিষ্ট বৃহৎ মিম্বার ও মিনার, যার প্রতিটি গম্বুজ ও মিনারে রয়েছে বৈদ্যুতিক লাইটিং। রাত হলে গোটা ঈদগাহ এলাকা হয়ে ওঠে আলোঝলমলে।
প্রতিবছর এখানকার ঈদ জামাত হয়ে উঠছে দেশের অন্যতম ধর্মীয় ও সামাজিক মহাসম্মেলন।