অনেক অনেক আগের কথা। তখন আকাশ, পৃথিবী, চাঁদ-সূর্য, গাছ-পালা কিছুই ছিল না। শুধু ছিলেন একমাত্র আল্লাহ। তিনি সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা।

একদিন আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের বললেন,
“আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি সৃষ্টি করতে চাই।”

ফেরেশতারা জিজ্ঞেস করলেন,
“হে আল্লাহ! আপনি কি এমন কাউকে সৃষ্টি করবেন, যে পৃথিবীতে ঝগড়া করবে আর রক্ত ঝরাবে?”

আল্লাহ বললেন,
“আমি যা জানি, তা তোমরা জানো না।”

এরপর আল্লাহ মাটি দিয়ে এক আশ্চর্য সুন্দর মানুষ তৈরি করলেন। তিনি তাঁর মধ্যে প্রাণ দিলেন। সেই মানুষটির নাম রাখা হলো আদম (আঃ) — তিনিই আমাদের সবার প্রথম বাবা।

আল্লাহ আদম (আঃ)-কে জান্নাতে রাখলেন। তাঁকে নানা বিষয়ে শিক্ষা দিলেন। আদম (আঃ) অনেক জ্ঞান শিখে গেলেন। আল্লাহ তাঁর সম্মানে ফেরেশতাদের বললেন,
“তোমরা আদমকে সিজদা করো।”

সব ফেরেশতা সিজদা করলেন। কিন্তু একজন সিজদা করল না — সে ছিল ইবলিস।

ইবলিস বলল,
“আমি আগুন দিয়ে তৈরি, আর আদম মাটি দিয়ে! আমি কেন তাকে সিজদা করব?”

এই অহংকারের জন্য আল্লাহ ইবলিসকে জান্নাত থেকে বের করে দিলেন। তখন থেকে ইবলিস হলো শয়তান, মানুষদের শত্রু।

আল্লাহ আদম (আঃ)-কে এক সাথী দিলেন — তাঁর নাম হাওয়া (আঃ)। তাঁরা একসাথে জান্নাতে থাকতেন। কিন্তু শয়তান চুপিচুপি ধোঁকা দিতে লাগল।

একদিন সে আদম ও হাওয়া (আঃ)-কে বলল,
“এই গাছের ফল খেলে তোমরা চিরকাল বেঁচে থাকবে!”

আল্লাহ তাঁদের নিষেধ করেছিলেন সেই ফল না খেতে। কিন্তু শয়তানের কথায় তাঁরা ভুল করে সেই ফল খেয়ে ফেললেন।

আল্লাহ বললেন,
“তোমরা আমার কথা অমান্য করেছো। এখন তোমাদের পৃথিবীতে যেতে হবে।”

এরপর আদম (আঃ) ও হাওয়া (আঃ) দুঃখ পেলেন। তাঁরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলেন। আল্লাহ তাঁদের ক্ষমা করলেন এবং পৃথিবীতে পাঠালেন।

এখান থেকেই মানুষের জীবন শুরু হলো। আদম (আঃ) হলেন প্রথম নবী এবং আমাদের সবার পূর্বপুরুষ।

📘 শিক্ষা:

• আমরা সবাই হযরত আদম (আঃ)-এর সন্তান।

• অহংকার করা খুব খারাপ কাজ।

• শয়তানের ধোঁকায় না পড়ে সব সময় আল্লাহর আদেশ মানতে হবে।

• ভুল করলে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইতে হয়।