অনেক অনেক আগের কথা। তখন পৃথিবীর মানুষরা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তারা আল্লাহকে ভুলে গিয়েছিল এবং মূর্তি বানিয়ে সেগুলোর উপাসনা করত। তারা ভালো কাজ করত না, মিথ্যা বলত, লড়াই করত আর একে অপরের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করত।
আল্লাহ তাআলা এইসব দেখে খুব কষ্ট পেলেন। তাই তিনি মানুষদের সঠিক পথ দেখানোর জন্য একজন নবী পাঠালেন। তাঁর নাম ছিল নূহ (আঃ)।
নূহ (আঃ) অনেক বছর ধরে মানুষদের বোঝাতে লাগলেন,
“তোমরা মূর্তি উপাসনা করো না। একমাত্র আল্লাহকেই ডেকো, তাঁর কথা শুনো। তিনিই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং তিনিই সব কিছুর মালিক।”
কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ নূহ (আঃ)-এর কথা শুনল না। তারা তাঁকে উপহাস করত, মজা করে হাসত। কেউ কেউ বলত, “তুমি তো পাগল!” আবার কেউ বলত, “তুমি আমাদের নেতা হতে চাও!”
তবুও নূহ (আঃ) ধৈর্য ধরে বারবার বলেই গেলেন। তিনি একটুও রাগ করতেন না।
একদিন আল্লাহ তাআলা বললেন,
“হে নূহ! তুমি আর তোমার অনুসারীদের আমি রক্ষা করব। তুমি একটা বড় নৌকা বানাও। যাদের অন্তরে ঈমান আছে, তারা তাতে উঠবে। আর প্রতিটি প্রাণীর এক জোড়া করে সেই নৌকায় নেবে।”
নূহ (আঃ) মরুভূমির মাঝে কাঠ কেটে কেটে বিশাল এক নৌকা বানাতে শুরু করলেন। লোকেরা হাসতে লাগল,
“হা হা হা! মরুভূমিতে নৌকা? এখানে তো পানি নেই! তুমি কি পাগল নাকি?”
নূহ (আঃ) কিছু বললেন না। তিনি জানতেন, আল্লাহর আদেশে কিছুই অসম্ভব নয়।
অবশেষে একদিন আকাশ কালো হয়ে এল। বড় বড় বজ্রপাত হতে লাগল। তারপর শুরু হলো প্রবল বৃষ্টি। পানি বাড়তে লাগল... ধীরে ধীরে বাড়ি, গাছপালা, সবকিছু ডুবে গেল।
নূহ (আঃ) তাঁর পরিবার, ঈমানদার মানুষরা এবং প্রতিটি প্রাণীর এক জোড়া করে সেই নৌকায় উঠে পড়ল। তখন আল্লাহ সেই বিশাল নৌকাটি ভাসিয়ে দিলেন।
নৌকা চলল উঁচু উঁচু ঢেউয়ের ওপর দিয়ে, দিনের পর দিন।
অনেক দিন পরে বৃষ্টি থামল। পানি কমতে শুরু করল। অবশেষে নৌকাটি এক পাহাড়ের ওপর থেমে গেল। সেই পাহাড়ের নাম জুদি পাহাড়।
নূহ (আঃ) এবং তাঁর সঙ্গীরা আল্লাহর শোকর আদায় করলেন। এরপর তারা সেই জায়গাতেই নতুন করে বসতি গড়ে তুললেন।
ছোট বন্ধুরা! হযরত নূহ (আঃ)-এর মতো ধৈর্য ধরো, সত্য বলো আর সবসময় আল্লাহর কথা মানো — তাহলেই তোমাদের জীবন হবে সফল ও সুন্দর।
প্রকাশক ও সম্পাদক
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।