প্রিন্ট এর তারিখঃ অক্টোবর ১৪, ২০২৫, ১১:২৯ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুন ১০, ২০২৫, ৪:৪২ পি.এম
লস অ্যাঞ্জেলেসে সেনা পাঠানোর ঘটনায় ট্রাম্পের বিরোধিতা
২০২৫ সালের প্রথম দিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসন রোধ এবং নথিবিহীন অভিবাসীদের শনাক্ত ও আটক করার জন্য একাধিক কঠোর পদক্ষেপ ঘোষণা করেন। এর মধ্যে একটি হলো বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং ফেডারেল এজেন্সি (যেমন আইসিই - ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) অভিযান চালানো। ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্য, বিশেষ করে লস অ্যাঞ্জেলেস শহর, যেখানে অভিবাসীদের বেশ বড় একটি জনসংখ্যা রয়েছে, সেখানে এই অভিযান শুরু হলে ব্যাপক উত্তেজনা ও বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
বিক্ষোভ বেশ তীব্র ও সহিংস রূপ নেয়, যেখানে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশ ও আইসিই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ইটপাটকেল ও মলোটভ ককটেল ছোড়ার মতো কর্মকা- ঘটায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ট্রাম্প প্রশাসন ন্যাশনাল গার্ড ও মেরিন সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়।
তবে এই মোতায়েনের ক্ষেত্রে রাজ্য প্রশাসনের সাথে কোনও পূর্ব আলোচনা বা সম্মতি হয়নি। এর ফলে ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্য প্রশাসন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে ফেডারেল আদালতে মামলা করে। অভিযোগ, মার্কিন সংবিধানের “পিটসবার্গ কনসেন্ট ক্লজ” অনুযায়ী, ফেডারেল সরকার অঙ্গরাজ্যের অনুমতি ছাড়া সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করতে পারে না, বিশেষত যখন পরিস্থিতি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে থাকে।
মামলার মূল দাবি:
- প্রেসিডেন্ট ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্য প্রশাসনের সম্মতি ছাড়াই সেনা মোতায়েন করেছেন, যা সংবিধান লঙ্ঘন।
- মোতায়েনকৃত ন্যাশনাল গার্ড ও মেরিন বাহিনীর সদস্যরা ক্যালিফোর্নিয়ার নির্দেশ মেনে চলার দাবি করা হয়েছে, যাতে রাজ্য প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকে।
- মোতায়েনের ফলে অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং নাগরিকদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।
রাজ্যের প্রতিক্রিয়া ও পরবর্তী ধারা:
- ক্যালিফোর্নিয়া গভর্নর গ্যাভিন নিউসাম মোতায়েনের তীব্র বিরোধিতা করেছেন এবং আগেই ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা হুমকি দিয়েছিলেন।
- মামলার মাধ্যমে তারা ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপকে সংবিধানবিরুদ্ধ ও অবৈধ হিসেবে চিহ্নিত করতে চান।
- নিউসাম দাবি করেছেন, ট্রাম্প যদি সেনা প্রত্যাহার করেন, তাহলে রাজ্যও মামলা তুলে নেবে।
হোয়াইট হাউসের প্রতিক্রিয়া:
- প্রেসিডেন্টের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আনা কেলি নিউসামের এই মামলাকে “নিজস্ব স্বার্থ ও আত্মসম্মান রক্ষার চেষ্টা” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
- তিনি আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরাপত্তা ও দেশের স্বার্থের চেয়ে নিউসাম নিজের স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।
সামাজিক প্রেক্ষাপট ও ভবিষ্যত প্রভাব:
- লস অ্যাঞ্জেলেস এবং ক্যালিফোর্নিয়ার অন্যান্য শহরে ব্যাপক অভিবাসী জনসংখ্যা থাকায় এই অভিযান ও মোতায়েন ব্যাপক সামাজিক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
- রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে এই টানাপোড়েন সংবিধানগত ও প্রশাসনিক বিরোধের পাশাপাশি নাগরিক অধিকারের লড়াইয়ের প্রতিফলন।
- আগামী দিনে এই মামলা ও রাজনৈতিক উত্তেজনা যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্য-ফেডারেল সম্পর্ক এবং অভিবাসন নীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
প্রকাশক ও সম্পাদক
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।