
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার গঠিত হবে, তাতে কোনো দায়িত্বে থাকার আগ্রহ নেই বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার লন্ডনে ব্রিটিশ নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউস আয়োজিত এক সংলাপে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, “সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমি শুধু একটি শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথ তৈরি করে দিতে চাই।”
এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, “ঘোষিত সময়টিই নির্বাচনের জন্য সঠিক সময়। ১৭ বছর পর একটি ঐতিহাসিক নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এরপর আমি আর কোনো দায়িত্বে থাকব না।”
ড. ইউনূস বলেন, সরকার ইতিমধ্যে প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের জন্য সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। তিনি বলেন, “আমরা এসব কমিশনের সুপারিশের দিকে তাকিয়ে আছি। আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐকমত্য সৃষ্টি করা।”
তিনি জানান, সরকার ‘জুলাই সনদ’ প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে, যা দেশের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা হিসেবে জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে। “আমরা চাই এই সনদ দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার একটি রূপরেখা হোক,”— বলেন তিনি।
বক্তব্যের শুরুতে ড. ইউনূস বলেন, “আমরা আজ এমন এক সভ্যতার অংশ হয়ে গেছি, যা নিজের ধ্বংস নিজেই ডেকে আনছে।” তিনি বলেন, বর্তমান সভ্যতা থেকে উত্তরণে নতুন এক মানবিক মূল্যবোধভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে হবে।
তিনি তিনটি বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন:
- কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামানো
- বেকারত্ব দূরীকরণ
- ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী গঠন
“এটা শুধু শিক্ষা বা তথ্যের প্রশ্ন নয়, এটা অস্তিত্বের প্রশ্ন,” বলেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী এই অর্থনীতিবিদ।
চ্যাথাম হাউসের এই সংলাপে যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য দেশের কূটনীতিক, গবেষক ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। তারা বাংলাদেশের চলমান গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, নির্বাচনকালীন পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়ে আগ্রহের সঙ্গে আলোচনা করেন।
ঘোষণা | নির্বাচনের পর কোনো দায়িত্বে না থাকার অঙ্গীকার |
নির্বাচন | সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে |
সংস্কার | প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা কমিশন |
জুলাই সনদ’ | রাজনৈতিক ও উন্নয়ন কাঠামোর ঘোষণাপত্র |
মূল বার্তা | “নতুন সভ্যতা গড়ার এখনই সময়” |