০৬:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইরানের উপর ইসরায়েলের ‘প্রথম হামলা’ স্বীকার করলেন নেতানিয়াহু

ইরানের রাজধানী তেহরানে জোরালো বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। শুক্রবার (১৩ জুন) ভোররাতে ইসরায়েল ইরানের বিভিন্ন পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় ‘ডজন ডজন’ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

নেতানিয়াহু বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে ধ্বংসের হুমকি প্রতিহত করার কাজ সম্পন্ন করতে যতক্ষণ প্রয়োজন ততক্ষণ এই অভিযান চলবে।”
একটি পূর্ব-রেকর্ড করা ভিডিও বার্তায় তিনি দাবি করেন, হামলার মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির অবকাঠামো এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কারখানাগুলো।

একজন ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, “তেহরানসহ বিভিন্ন অঞ্চলে পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলিতে একযোগে হামলা চালানো হয়েছে।”
তিনি আরও দাবি করেন, ইরান বর্তমানে এমন একটি পর্যায়ে রয়েছে যেখানে মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই ১৫টি পারমাণবিক বোমা তৈরির উপযোগী উপাদান তারা সংগ্রহ করতে পারত। “আমরা আর অপেক্ষা করিনি,” বলেন ওই কর্মকর্তা।

এদিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা নূর নিউজ জানিয়েছে, রাজধানী তেহরান এবং আশেপাশে একাধিক “জোরালো বিস্ফোরণের” শব্দ শোনা গেছে। বিস্ফোরণের পরপরই ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে। তেহরানের ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সব ফ্লাইট সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।

এই হামলার সময়ই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যস্থতায় ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার পরোক্ষ পারমাণবিক আলোচনা চলছিল। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ আলোচনাকে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত করে দিতে পারে এবং এক ভয়াবহ যুদ্ধের দিকে পরিস্থিতি নিয়ে যেতে পারে।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনার মধ্যে বৃহৎ সংঘাতের সম্ভাবনা ক্রমেই বাড়ছে। এই যুদ্ধ গোটা বিশ্বকে প্রভাবিত করতে পারে।”

হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তুরস্ক, কাতার এবং সৌদি আরব পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। জাতিসংঘ এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি, তবে নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই হামলা সরাসরি যুদ্ধের সূচনা না করলেও দুই দেশের মধ্যে ‘ছায়াযুদ্ধ’ এখন আর গোপনে থাকছে না— এটা প্রকাশ্য সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে।

ট্যাগ

শিক্ষা ভবনের সামনে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ইরানের উপর ইসরায়েলের ‘প্রথম হামলা’ স্বীকার করলেন নেতানিয়াহু

প্রকাশিত হয়েছে: ০৭:৪৫:৫৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫

ইরানের রাজধানী তেহরানে জোরালো বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। শুক্রবার (১৩ জুন) ভোররাতে ইসরায়েল ইরানের বিভিন্ন পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় ‘ডজন ডজন’ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

নেতানিয়াহু বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে ধ্বংসের হুমকি প্রতিহত করার কাজ সম্পন্ন করতে যতক্ষণ প্রয়োজন ততক্ষণ এই অভিযান চলবে।”
একটি পূর্ব-রেকর্ড করা ভিডিও বার্তায় তিনি দাবি করেন, হামলার মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির অবকাঠামো এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কারখানাগুলো।

একজন ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, “তেহরানসহ বিভিন্ন অঞ্চলে পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলিতে একযোগে হামলা চালানো হয়েছে।”
তিনি আরও দাবি করেন, ইরান বর্তমানে এমন একটি পর্যায়ে রয়েছে যেখানে মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই ১৫টি পারমাণবিক বোমা তৈরির উপযোগী উপাদান তারা সংগ্রহ করতে পারত। “আমরা আর অপেক্ষা করিনি,” বলেন ওই কর্মকর্তা।

এদিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা নূর নিউজ জানিয়েছে, রাজধানী তেহরান এবং আশেপাশে একাধিক “জোরালো বিস্ফোরণের” শব্দ শোনা গেছে। বিস্ফোরণের পরপরই ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে। তেহরানের ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সব ফ্লাইট সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।

এই হামলার সময়ই যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যস্থতায় ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার পরোক্ষ পারমাণবিক আলোচনা চলছিল। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ আলোচনাকে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত করে দিতে পারে এবং এক ভয়াবহ যুদ্ধের দিকে পরিস্থিতি নিয়ে যেতে পারে।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনার মধ্যে বৃহৎ সংঘাতের সম্ভাবনা ক্রমেই বাড়ছে। এই যুদ্ধ গোটা বিশ্বকে প্রভাবিত করতে পারে।”

হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তুরস্ক, কাতার এবং সৌদি আরব পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। জাতিসংঘ এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি, তবে নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই হামলা সরাসরি যুদ্ধের সূচনা না করলেও দুই দেশের মধ্যে ‘ছায়াযুদ্ধ’ এখন আর গোপনে থাকছে না— এটা প্রকাশ্য সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে।