
রাজধানীর সবুজবাগ এলাকায় ভয়াবহ এক হত্যাকাণ্ডে প্রাণ হারালেন প্লাস্টিক ব্যবসায়ী জাকির হোসেন (৫৫)। মুঠোফোনে ডেকে নিয়ে তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ছয় টুকরো করে হত্যা করা হয়। পরে লাশ বস্তায় ঢুকিয়ে একটি ঝোপের মধ্যে পুঁতে ফেলে দুর্বৃত্তরা। নিখোঁজ হওয়ার ৯ দিন পর আজ বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে।
পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে আজহার আলী নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে আরও তিনজন—শুক্কুর আলী, রাজীব ও স্বপনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা পেশায় রংমিস্ত্রি এবং জাকির হোসেনের পরিচিত ছিলেন।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, হত্যাকাণ্ডের কয়েকদিন আগে জাকিরের সঙ্গে শুক্কুর আলীর কথা-কাটাকাটি হয়। এরপর আজহারের বাসায় ডেকে নিয়ে ৪ জুন রাতে জাকিরকে চারজন মিলে নির্মমভাবে হত্যা করে। তাঁর মরদেহের দুই হাত, দুই পা, মাথা ও গলা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন ডান হাতটি এখনও পাওয়া যায়নি।
নিহতের পরিবার দাবি করছে, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। জাকিরের ছোট ভাই আলী হোসেন ও মাসুদ হোসেন অভিযোগ করেন, তাঁদের চাচাতো ভাইয়েরা ভাড়া করা লোকজন দিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে। জাকিরের সঙ্গে থাকা আড়াই লাখ টাকা এবং দোকানের পণ্যের বিক্রির টাকা পাওয়া যায়নি।
এদিকে সবুজবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইয়াছিন আলী জানিয়েছেন, নিহত জাকিরের সঙ্গে থাকা টাকা লুট করতেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে জমি সংক্রান্ত বিরোধসহ অন্য সম্ভাবনাগুলোও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, আজহার আলীর বাসায় আগেও মাদকাসক্তদের আনাগোনা ছিল এবং সেখানে প্রায়ই মদ্যপানের আসর বসতো।
নিহত জাকির হোসেনের পরিবারে এখন শোকের ছায়া। স্ত্রী রেখা বেগম বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন, সন্তানরা বাকরুদ্ধ। তাঁর ছোট ভাই আলী হোসেন বিলাপ করে বলেন, “আমার ভাই কারও ক্ষতি করেনি, ওর এমন পরিণতি কেন হলো?”
পুলিশ জানিয়েছে, হত্যার সঙ্গে জড়িতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং মামলার তদন্তে আরও তথ্য বেরিয়ে আসতে পারে।