১১:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মধ্যপ্রাচ্যে নতুন যুদ্ধের আশঙ্কা: ইরানে ইসরায়েলের বিমান হামলা

রাজধানী তেহরানসহ ইরানের অন্তত ৮টি শহরে একযোগে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী (IAF)। শুক্রবার শুরু হওয়া এই হামলার নাম দিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF)— ‘দ্য রাইজিং লায়ন’।

সূত্র জানায়, ইরানের পরমাণু প্রকল্পের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা লক্ষ্য করেই এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মতে, এই হামলা একেবারে ‘অপ্রত্যাশিত’ নয়। ২০২৫ সালের শুরু থেকেই তারা সতর্ক করে আসছিলেন, ইসরায়েল যে কোনো সময় ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালাতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই উদ্বিগ্ন ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু অনেকবারই ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখতে সামরিক পথই হতে পারে একমাত্র কার্যকর উপায়।

২০২৪ সালের অক্টোবরেও ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ইরান-সমর্থিত হামলার প্রতিশোধে আইডিএফ একবার বিমান হামলা চালিয়েছিল। তবে এবার হামলার ব্যাপ্তি, সময় ও লক্ষ্যবস্তুর গভীরতা—সবই অনেক বেশি বিস্তৃত ও কৌশলগত।

হামলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট:
সম্প্রতি ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটে আগাম নির্বাচনের প্রস্তাব উঠেছিল। অল্প ভোটের ব্যবধানে নেতানিয়াহু সেই প্রস্তাব থেকে রক্ষা পেলেও জনসমর্থনে তার অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়ছে। গাজা যুদ্ধ, জিম্মিদের মুক্তিতে ব্যর্থতা এবং দীর্ঘ সময় ধরে চলা সামরিক অভিযানে ক্লান্ত ইসরায়েলি জনগণ নেতানিয়াহুর ওপর ক্ষুব্ধ।

এই প্রেক্ষাপটে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অভ্যন্তরীণ চাপ থেকে নজর ঘোরাতে এবং রাজনৈতিক অবস্থান শক্তিশালী করতে ইরানে হামলার মাধ্যমে শক্তিশালী জাতীয়তাবাদী বার্তা দিতে চাইছেন নেতানিয়াহু।

ইরানইসরায়েল উত্তেজনার পেছনে মূল কারণ:

  • ইরান বহু বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে হামাস, হিজবুল্লাহ, হুথি প্রভৃতি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে ইসরায়েলবিরোধী কার্যক্রমে সহায়তা দিয়ে আসছে।
  • ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর ইরানের নেতৃত্ব ইসরায়েলের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ করে আসছে।
  • ইরানকে ‘অস্তিত্বগত হুমকি’ মনে করে আসছে ইসরায়েল।

মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে:
এই হামলার স্বল্পমেয়াদি লক্ষ্য হলো— ইরানের পরমাণু প্রকল্প ধ্বংস করা। আর দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য হচ্ছে— ইরানের বর্তমান কট্টর ইসলামপন্থী সরকারের পতন ঘটানো।

উল্লেখযোগ্য পটভূমি:
গত বছর ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর হামলার প্রতিশোধে গাজা, লেবানন এবং ইয়েমেনে একাধিক হামলা চালায় ইসরায়েল। এবারের অভিযান সেই প্রতিরোধের ধারাবাহিক অংশ বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

এই হামলার জেরে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে একটি বড় যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মহল পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

 

ট্যাগ

মধ্যপ্রাচ্যে নতুন যুদ্ধের আশঙ্কা: ইরানে ইসরায়েলের বিমান হামলা

প্রকাশিত হয়েছে: ০৭:২৩:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫

রাজধানী তেহরানসহ ইরানের অন্তত ৮টি শহরে একযোগে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী (IAF)। শুক্রবার শুরু হওয়া এই হামলার নাম দিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF)— ‘দ্য রাইজিং লায়ন’।

সূত্র জানায়, ইরানের পরমাণু প্রকল্পের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা লক্ষ্য করেই এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মতে, এই হামলা একেবারে ‘অপ্রত্যাশিত’ নয়। ২০২৫ সালের শুরু থেকেই তারা সতর্ক করে আসছিলেন, ইসরায়েল যে কোনো সময় ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালাতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই উদ্বিগ্ন ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু অনেকবারই ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখতে সামরিক পথই হতে পারে একমাত্র কার্যকর উপায়।

২০২৪ সালের অক্টোবরেও ইসরায়েলি ভূখণ্ডে ইরান-সমর্থিত হামলার প্রতিশোধে আইডিএফ একবার বিমান হামলা চালিয়েছিল। তবে এবার হামলার ব্যাপ্তি, সময় ও লক্ষ্যবস্তুর গভীরতা—সবই অনেক বেশি বিস্তৃত ও কৌশলগত।

হামলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট:
সম্প্রতি ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটে আগাম নির্বাচনের প্রস্তাব উঠেছিল। অল্প ভোটের ব্যবধানে নেতানিয়াহু সেই প্রস্তাব থেকে রক্ষা পেলেও জনসমর্থনে তার অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়ছে। গাজা যুদ্ধ, জিম্মিদের মুক্তিতে ব্যর্থতা এবং দীর্ঘ সময় ধরে চলা সামরিক অভিযানে ক্লান্ত ইসরায়েলি জনগণ নেতানিয়াহুর ওপর ক্ষুব্ধ।

এই প্রেক্ষাপটে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অভ্যন্তরীণ চাপ থেকে নজর ঘোরাতে এবং রাজনৈতিক অবস্থান শক্তিশালী করতে ইরানে হামলার মাধ্যমে শক্তিশালী জাতীয়তাবাদী বার্তা দিতে চাইছেন নেতানিয়াহু।

ইরানইসরায়েল উত্তেজনার পেছনে মূল কারণ:

  • ইরান বহু বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে হামাস, হিজবুল্লাহ, হুথি প্রভৃতি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে ইসরায়েলবিরোধী কার্যক্রমে সহায়তা দিয়ে আসছে।
  • ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর ইরানের নেতৃত্ব ইসরায়েলের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ করে আসছে।
  • ইরানকে ‘অস্তিত্বগত হুমকি’ মনে করে আসছে ইসরায়েল।

মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে:
এই হামলার স্বল্পমেয়াদি লক্ষ্য হলো— ইরানের পরমাণু প্রকল্প ধ্বংস করা। আর দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য হচ্ছে— ইরানের বর্তমান কট্টর ইসলামপন্থী সরকারের পতন ঘটানো।

উল্লেখযোগ্য পটভূমি:
গত বছর ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোর হামলার প্রতিশোধে গাজা, লেবানন এবং ইয়েমেনে একাধিক হামলা চালায় ইসরায়েল। এবারের অভিযান সেই প্রতিরোধের ধারাবাহিক অংশ বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

এই হামলার জেরে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে একটি বড় যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মহল পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।