ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের সামরিক বিমান হামলায় দেশটির অন্তত ১২ জন শীর্ষ পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন। শনিবার এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। এই বিজ্ঞানীরা ইরানের পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচির প্রাণভোমর ছিলেন বলে দাবি করা হয়।
ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’-এর আওতায় শুক্রবার ভোররাতে তেহরানে চালানো সমন্বিত বিমান হামলায় ৯ জন জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞকে হত্যা করা হয়েছে। পরে, শনিবার ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জানানো হয়, ইসরায়েলের নতুন হামলায় আরও তিন জন পরমাণু বিজ্ঞানী প্রাণ হারিয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নিহত বিজ্ঞানীদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে, যাদের মধ্যে আছেন—
এছাড়া নতুন হামলায় নিহত হওয়া তিন বিজ্ঞানীর নাম এখনও প্রকাশ করেনি ইরান। তবে ইরানের দাবি, এই বিজ্ঞানীরা সক্রিয়ভাবে পরমাণু গবেষণার অগ্রভাগে ছিলেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই বিজ্ঞানীদের অনেকেই মোহসেন ফাখরিজাদেহর উত্তরসূরি ছিলেন, যাকে ২০২০ সালে এক হামলায় হত্যা করা হয়েছিল। তাদের কয়েক দশকের অভিজ্ঞতা ইরানের পারমাণবিক প্রকল্পকে টিকিয়ে রেখেছিল।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “বহু বছর ধরে গুপ্তচরবৃত্তি ও গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে এই অভিযান পরিকল্পিতভাবে সফল করা হয়েছে।”
ইসরায়েলের দাবি, এই হামলায় ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে ‘বিপর্যয়কর’ ক্ষতি হয়েছে এবং দেশটির অস্ত্র তৈরির সক্ষমতায় একটি বড় ধাক্কা দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
অন্যদিকে, ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন শনিবার জানায়, এই হামলা ‘যুদ্ধের ঘোষণার’ শামিল। তারা দাবি করেছে, নতুন করে আরও তিন বিজ্ঞানীর মৃত্যুর মাধ্যমে ইসরায়েল ‘সীমা লঙ্ঘন করেছে।’
ইরানের সামরিক বাহিনী জানায়, আকাশ প্রতিরক্ষা জোরদার করা হয়েছে এবং সমস্ত পারমাণবিক স্থাপনায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে পারমাণবিক উত্তেজনা এক নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে। ইসরায়েলের সরাসরি হামলা এবং ইরানের পাল্টা প্রতিশোধমূলক মনোভাব — দুই দেশকে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে ঠেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কূটনৈতিকরা।
প্রকাশক ও সম্পাদক
© কপিরাইট সমাচার বিশ্ব ২০২৫ | আমাদের ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।