ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার পর পাল্টা প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সূত্র এবং সেনাবাহিনী নিশ্চিত করেছে যে, ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো ইরাক ও সিরিয়ায় অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোতে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিশেষ করে ইরাকের আনবার প্রদেশে অবস্থিত আইন আল-আসাদ ঘাঁটি এবং কুর্দিস্তানের ইরবিল বিমানঘাঁটি হামলার শিকার হতে পারে। এই দুটি ঘাঁটিই মার্কিন ও জোট বাহিনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

🔺 সতর্ক অবস্থানে ইরাক সরকার

নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ইরানপন্থী গোষ্ঠীগুলোর উপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে। ইরাকি কর্তৃপক্ষ সম্ভাব্য হামলা ঠেকাতে সক্রিয় অবস্থান নিয়েছে। দেশটির এক শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তার ভাষায়,

“আমরা চাচ্ছি না ইরাক নতুন করে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হোক।”

তবে এখন পর্যন্ত এই প্রতিবেদন নিয়ে ওয়াশিংটন বা তেহরান সরাসরি কোনো মন্তব্য করেনি।

🧭 আক্রমণের লক্ষ্য: আইন আল-আসাদ ও ইরবিল ঘাঁটি

ইরাকের পশ্চিমাঞ্চলের আনবার প্রদেশে অবস্থিত।

যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা এখান থেকে ইরাকি বাহিনী ও ন্যাটো মিশনে সহায়তা করে।

২০২০ সালে জেনারেল কাসেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার পর, এই ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছিল।

ইরাকের আধা-স্বায়ত্ত্বশাসিত কুর্দিস্তান অঞ্চলে অবস্থিত।

এটি মার্কিন বাহিনীর জন্য একটি কৌশলগত কেন্দ্র, যেখানে সামরিক প্রশিক্ষণ, গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান ও লজিস্টিক সহায়তা পরিচালিত হয়।

🧨 পটভূমি: ইরান–যুক্তরাষ্ট্র সংঘাতের সম্প্রসারণ

সাম্প্রতিক সময়ে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা আবারও চরমে পৌঁছেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ স্টিলথ বোমারু দিয়ে পরিচালিত হামলায় ইরানের পরমাণু স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর প্রকাশ্যে আসার পর পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে ওঠে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ার অংশ হিসেবে ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোকে মাঠে নামানো হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হামলা যদি ঘটে, তাহলে এটি যুক্তরাষ্ট্র–ইরান সংঘাতকে সরাসরি যুদ্ধের দিকে নিয়ে যেতে পারে, যেখানে ইরাক ও সিরিয়া মূল যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্য নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিতও দেখা যেতে পারে।